ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

লিবিয়ায় হত‌্যা: গোপালগঞ্জে ৩ পাচারকারীর বিরুদ্ধে মামলা

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২৮, ১ জুন ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
লিবিয়ায় হত‌্যা: গোপালগঞ্জে ৩ পাচারকারীর বিরুদ্ধে মামলা

নিহত সুজন মৃধা (বাঁয়ে), আহত ওমর শেখ (ডানে)

সম্প্রতি লিবিয়ায় গুলি করে ২৬ বাংলাদেশিকে হত‌্যা করেছে দুবৃত্তরা। এদের মধ‌্যে দুই যুবককে হত্যা ও অপর এক যুবকের আহত হওয়ার ঘটনায় গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে তিন মানব পাচারকারী বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সোমবার (১ জুন) দুপুরে নিহত সুজন মৃধার পিতা কাবুল মৃধা বাদী হয়ে মুকসুদপুর থানায় এ মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-১, তারিখ: ০১.০৬.২০২০)।

মুকসুদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মৃধা আবুল কালাম আজাদ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার আসামিরা হলেন- মানব পাচারকারী গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার সুন্দরদী গ্রামের ওসমান শেখের ছেলে লিয়াকত শেখ ওরফে লেকু শেখ (৪৫), একই উপজেলার যাত্রাবাড়ী গ্রামের মৃত রজব আলী মোড়লের ছেলে রব মোড়ল (৪৫) ও মাদারীপুর জেলার রাজৈর থানার সত্যবর্তী গ্রামের আবদুল মজিদ সরদারের ছেলে জুলহাস সরদার।

মামলার বিবরণে নিহত সুজন মৃধার পিতা কাবুল মৃধা জানান, গত ১ জানুয়ারি তার ছেলে সুজন মৃধা ও ভাগ্নে ফরিদপুর জেলার সালথা থানার আলমপুর গ্রামের কবির শেখের ছেলে কামরুল শেখকে আট লাখ টাকা ও কালাম শেখের ছেলে ওমর শেখকে চার লাখ টাকার বিনিময়ে লিবিয়া পাঠানোর পর ভাল বেতনে চাকরি দেওয়ার জন্য মৌখিক চুক্তি হয়। এরপর ১৫ জানুয়ারি তিনি দুই লাখ ৫০ হাজার ও কালাম শেখ ৫০ হাজার টাকা দালাল রব মোড়কে দেন। পরে রব মোড়ল অন্য দুই আসামির কাছে টাকা পৌঁছে দেন।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি আসামিরা লিবিয়া পাঠানোরে উদ্দেশ্যে সুজন মৃধা, কামরুল শেখ ও ওমর শেখকে বাড়ি থেকে ঢাকায় নিয়ে যান। এরপর ভারত থেকে দুবাই, কুয়েত ও মিশর হয়ে লিবিয়া পাঠায়।

পরবর্তীতে ১১ ফেব্রুয়ারি আসামিদের পাঁচ লাখ ৪০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। লিবিয়া যাওয়ার এক মাস পর চুক্তি ভেঙ্গে লিবিয়ার বেনগাজীর মিজদাহ শহরে নিয়ে আটক করে অন্যান্য আসামিদের সহায়তায় মুক্তিপনের দাবিতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। পরে দালাল চক্রটি সুজন মৃধা, কামরুল শেখ ও ওমর শেখের কাছে ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করে নির্যাতন করার ভয়েস ম্যাসেজ নিজ নিজ পরিবারের সদস্যদের কাছে পাঠায়।

এদিকে ম্যাসেজ পেয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের বিষয়টি আসামি তিন দালালকে জানানো হয়। তারা দাবীকৃত টাকা না দিলে কিছুই করতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয়। এরপর ২৮ মে সুজন মৃধা ও কামরুল শেখকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওমর শেখ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারাত্মক আহত হন।

আহত ওমর শেখের বাবা মো. কালাম শেখ ও মা শাহিদা বেগম তার আহত ছেলেকে ফেরত চেয়েছেন। একই সাথে তারা দালাল চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করে ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।

মুকসুদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মৃধা আবুল কালাম আজাদ জানান, দুই যুবককে গুলি করে হত্যা ও অপর এক যুবককে গুলি করে আহত করার ঘটনায় তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলা দায়েরের পরপরই পুলিশ আসামিদের বাড়ি অভিযান চালায়। তারা পলাতক রয়েছে। আসামিদের ধরতে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।


বাদল সাহা/সনি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়