ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

চুলায় আগুন জ্বলছে না মজিদা বেগমের

আল আমিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:২০, ২৮ জুন ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
চুলায় আগুন জ্বলছে না মজিদা বেগমের

টানা তিন দিন ধরে সুনামগঞ্জে মুষল ধারে বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট, ভিটে বাড়িও। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের রাধানগর এলাকার বাসিন্দা মজিদা বেগম। প্রচণ্ড বৃষ্টির কারণে বন্যার ভয় নিয়ে রাতে ঘুমাতে গেলেন, সকালে চোখ খুলে দেখেন সর্বনাশ! ডুবে গেছে রান্নাঘর-চুলা।সেজন্য শনিবার (২৭ জুন) সকাল থেকে মজিদা বেগমনের চুলায় আগুন জ্বলেনি। পাঁচ সন্তানকে নিয়ে বিপাকে অসহায় মজিদা বেগম।

দিনমজুর সহিবুর মিয়ার স্ত্রী মজিদা বেগমের সংসারে তিন মেয়ে ও দুই ছেলে। টানা-পড়েনের সংসারে করোনা মহামারিতে দেখা দিয়েছে মহাসংকট। অন্যদিকে বন্যা যেন 'মরার ওপর খাঁড়ার ঘা'। এ অবস্থা শুধুই মজিদা বেগমের নয়, আনোয়ার মিয়া, মুজিব মিয়া, ঝুঁনাকি বেগমসহ অনেক মানুষেরও।

শনিবার বিকেলে কথা হয় মজিদা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, রাতে সবাইকে নিয়ে ঘুমিয়েছি। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন ঘরে হাঁটু পানি। চুলায়ও পানিতে ডুবে গেছে। চুলায় আগুন না দিতে পারায় সকাল ও দুপুরে রান্না করে খেতে পারিনি। তিন মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে অনাহারে দিন কেটেছে। নিজে না খেয়ে থাকতে পারবো, কিন্তু ছোট ছেলে-মেয়েরা না খেয়ে আছে। তাদের নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছি। একদিকে করোনা নানা সংকট, এখন বন্যায় অসহায় করে দিলো।

একই গ্রামের ঝুঁনাকি বেগম বলেন, শনিবার সকাল থেকে পানি বাড়তে শুরু হয়। দুপুরের মধ্যে আমাদের এলাকার সবার ঘরে পানি উঠে যায়। চুলায় আগুন না দিতে পারায় আমার পরিবারের সবাই দুপুরে না খেয়ে থাকতে হয়েছে। আমাদের মতো অনেকের ঘরে বন্যার পানি ওঠায় খুব দুঃখে কষ্টে আছে। মুজিব মিয়াসহ একাধিকজন একই কথা বলেছেন।

গৌরারং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফুল মিয়া বলেন, ইউনিয়নের অনেকের বাড়ি-ঘর বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। তাদের আমার নিজের ঘর খুলে দিয়ে আশ্রয় দিয়েছি। এ পর্যন্ত ৭০জন আশ্রয় নিয়েছে। তাদের খাবার থেকে সবকিছু দেওয়া হচ্ছে। তবে এ বিষয়টি দ্রুত আমি দেখছি। তাদের থাকা ও খাবারের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন বলে জানান তিনি।

সদর উপজেলা নির্বহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইয়াসমিন নাহার রুমা বলেন, সদর উপজেলার অধিকাংশ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। আমরা প্রতিটি ইউনিয়নের মানুষের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি জানা ছিল না, খোঁজখবর নিচ্ছি। তবে আজকে জেলার অনেক জায়গায় বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। আমরা আগামীকাল থেকে বন্যায় প্লাবিল এলাকার মানুষের জন্য শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি খাবার জন্য ট্যাবলেট দেবো।



সুনামগঞ্জ/এসএম

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়