'ভাঙ্গা রাস্তা পার হলেই বুঝবেন, পৌরসভা শেষ'
আরিফুল ইসলাম সাব্বির || রাইজিংবিডি.কম
'ভাঙ্গা রাস্তায় সারা বছর পানি জমে থাকে, মাঝে মাঝে কয়েকটা করে ইট ফেলে যায় পৌর কর্তৃপক্ষ, কিন্ত তাতে সমাধান হয় না। আবার পানি জমে। ময়লা পানি আর ভাঙ্গা রাস্তা পার হলেই বুঝবেন পৌরসভা শেষ' কথাগুলো বলছিলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামসুর রহমান।
ঢাকার ধামরাই পৌরসভার আইঙ্গন এলাকায় এই চিত্র বছরজুড়ে দেখা যায়।
শামসুর রহমান আইঙ্গন এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। তিনি জানান, ধামরাই উপজেলা থেকে কালামপুর-সাটুরিয়া বাইপাস সড়কের আইঙ্গনের এ সড়কের বেশ কিছু স্থানে দীর্ঘদিন ধরে এমন বেহাল দশা। তবে প্রশাসন সড়কটির ব্যাপারে উদাসীন। কখনো কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়নি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধামরাই উপজেলা থেকে মাত্র ৪০০ মিটারের মধ্যেই এই সড়কটির কয়েকটি জায়গা ভাঙ্গা। সড়কে ময়লা পানি জমে আছে। পানি ডিঙ্গিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে অটো রিক্সা, মোটরসাইকেল। মাঝে মাঝেই ময়লা পানিতে উল্টে যায় ছোট-বড় যানবাহন। ক্ষতিগ্রস্ত হয় লোকজন।
এই সড়কের পাশেই একটি স্কুল। তার কয়েকশ‘মিটারের মধ্যেই বাজার। স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও বাজারে যাতায়াতকারীদের দুর্ভোগ স্বীকার করে নিয়েই বছরজুড়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
আইঙ্গন এলাকার বাসিন্দা রুহুল আমিন বলেন, ‘এই সড়কটি প্রায় ২০ বছর আগে পাকা করা হয়। তারপরপরই ভারি যানবাহন যাতায়াতের ফলে সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে রাস্তা কয়েকবার সংস্কার করা হলেও তা মানসম্মত হয়নি। এ কারণে সড়কের বিভিন্ন স্থানজুড়ে খানাখন্দপূর্ণ হয়ে পড়েছে।’
অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘সড়কটি সংস্কারের কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে প্রশাসন বারবার শুধু কিছু ইট ফেলে যায়। এ কারণে বৃষ্টি হলেই পানি জমে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে রাস্তাটি।
ধামরাই পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের (আইঙ্গন) কাউন্সিরর আরিফুল ইসলাম আরিফ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘সড়কটি এলজিইডির। ফলে এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও তাদের। তবে তারা তেমন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এরপরেও এলাকার মানুষের দুর্ভোগকে বিবেচনা করে আমরা মাঝে মাঝেই জায়গাটিতে ইট ফেলি। তাতে সাময়িক সুবিধা হলেও একটু বৃষ্টি হলেই আবার পানি জমে যায়। সড়কটি সংস্কারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত অংশের আরো কয়েকশ’ ফুট পর থেকে স্থানীয় সরকারে নিয়ন্ত্রণে। আবার আইঙ্গন এলাকাটি পড়েছে পৌরসভার মধ্যে। তাই ক্ষতিগ্রস্ত আইঙ্গন এলাকার সড়কের অংশটি নিজেদের আওতাভুক্ত নয় বলে রাইজিংবিডিকে জানান ধামরাই উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী সাইদুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘পুরো সড়কের ওই এলাকাটুকুই শুধু এমন ভাঙ্গা রয়েছে। সড়কটি আগে আমাদের ব্যবস্থাপনার মধ্যেই ছিল। পরে এটা পৌরসভার আওতাভুক্ত করা হয়। এরপর তারা কয়েকবার সেখানে ইট ফেলেছে। কিন্ত তাতে স্থায়ী সমাধান হয়নি। এদিকে স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণে না থাকায় আমরাও কিছু করতে পারছি না।’
এ বিষয়ে ধামরাই পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘সড়কটি শুরুতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ছিল। পরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলে যায়। সবশেষ পৌরসভার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়। আমাদের মেয়র সাহেব দেশের বাইরে আছেন। তিনি ফিরলেই আমরা সড়কটি সংস্কারের কাজের বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।’
সাভার/সাব্বির/সনি
রাইজিংবিডি.কম