ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০৯ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

শরনখোলায় একমাস ধরে পানিবন্দি ৩ শতাধিক পরিবার

আলী আকবর টুটুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫২, ১৬ জুন ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
শরনখোলায় একমাস ধরে পানিবন্দি ৩ শতাধিক পরিবার

একমাস ধরে পানিবন্দি অবস্থায় দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে বাগেরহাটের শরণখোলার তিন শতাধিক পরিবার। ঘুর্ণিঝড় আম্ফান ও বৃষ্টির পানিতে শরণখোলা উপজেলা সদরের রায়েন্দা বাজার ও আশপাশের পরিবারগুলো একমাস ধরে পানি বন্দি রয়েছেন।

পানি বদ্ধ থাকার ফলে রান্না-বান্নাও বন্ধ রয়েছে অনেক পরিবারের। অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন পানিবন্দি মানুষগুলো। ঘর থেকে বের হলেই দূষিত পানি-কাদা। জরুরি প্রয়োজনে এসব দূষিত পানি ও কাদা মাড়িয়েই বাইরে যেতে হয়।

ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ও তার পরবর্তী বৃষ্টির পানিতে ওই এলাকা তলিয়ে যায়। পানি উন্নয়ন বোর্ড, বাগেরহাটের নির্মানাধীন রায়েন্দা বাজার রক্ষা বাঁধের আটটি ড্রেন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় ওই পানি আর নামতে পারেনি। যার ফলে প্রায় একমাস ধরে পানিবন্দি রয়েছে উপজেলা সদরের রায়েন্দা বাজার ও আশপাশের বসবাসকারী পরিবারগুলো। ফলে নানা ধরনের শারিরীক, মানসিক, আর্থিক ও সামাজিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে পানিবন্দি পরিবারগুলো।

ওই এলাকার শিক্ষক ওমর ফারুক, কাঠ ব্যবসায়ী খলিল খাঁন, শহিদুল খাঁন, ফারুক খাঁন ও রহিমন বেগম বলেন, ‘আমরা রায়েন্দা সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পিছন থেকে সরকারী খাদ্যগুদাম পর্যন্ত প্রায় তিনশত পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় আছি। নারী ও শিশুরা গৃহবন্দি অবস্থায় আছে। কাঁচা টয়লেট ডুবে যাওয়ায় মলমূত্রের দুর্গন্ধ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। জীবিকার তাগিদে এসব ময়লা পানি মাড়িয়ে বাধ্য হয়ে বাড়ি থেকে বের হতে হচ্ছে। আমরা রান্না-বান্না, গোসল পর্যন্ত করতে পারছি না। ময়লা পানি শরীরে লেগে আমাদের অনেকের শরীরে চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। এ অবস্থার নিরসন চাই আমরা।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য জালাল আহম্মেদ রুমি জানান, বেড়িবাঁধের পাঁচ ছয়টি ড্রেনের মুখ বন্ধ। এতে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। দ্রুত ড্রেন নির্মাণ না করলে এ সমস্যার সমাধান হবে না।

রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিলন জানান, একটি পয়েন্ট থেকে পাইপ দিয়ে পানি নামানো ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে তা পর্যাপ্ত নয়। আটকে থাকা পানি বের করার জন্য আরও বিকল্প ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মূলত বেড়িবাঁধের সাথে ১০টি ড্রেন করার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তা এখনো নির্মাণ করছে না। এগুলো নির্মাণ হয়ে গেলে আর এ সমস্যা থাকবে না।

উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্প (সিইআইপি)-এর কর্মকর্তা প্রকৌশলী মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘সি এইচ ডাব্লিউ নামের চায়নার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বর্ষা মৌসুমে কাজ করে না। তাই অধিকাংশ কর্মী ছুটিতে নিজ দেশে চলে গেছেন। আর যারা আছেন, তারা বর্তমান পরিস্থিতিতে বের হচ্ছেন না। তারপরেও তাদের সাথে আলোচনা করে এ বিষয়ে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।’

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন, ‘পানিবন্দি এলাকা আমি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ প্রকল্প কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। দ্রুত পানি নিষ্কাশন করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।’


বাগেরহাট/সনি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়