ঢাকা     শনিবার   ০৪ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২১ ১৪৩১

চুয়াডাঙ্গায় পানির সমস্যায় ২ লাখ পৌরবাসী

এম এ মামুন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৫০, ১৯ জুন ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
চুয়াডাঙ্গায় পানির সমস্যায় ২ লাখ পৌরবাসী

বছর বছর বাড়ছে পৌর করের বোঝা। শহর জুড়ে প্রতিটি পানি সাপ্লাইয়ে লাইনে লাগানো হয়েছে পানির মিটার। প্রকারভেদে পৌরবাসীকে প্রতিমাসে গুণতে হচ্ছে মোটা অংকের পানির বিল। তার পরেও মিলছে না সুপেয় পানি।

দিনে দুবার করে পানি দেওয়া হয়। অথচ চারবার করে পানি দেওয়ার কথা। সে পানিতেও থাকে ময়লাসহ নানা প্রকার নোংরা। সব মিলিয়ে চুয়াডাঙ্গার প্রায় দুই লাখ পৌরবাসী পানির সমস্যায় চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে।

১৯৮৫ সালে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায় তিনটি ওভারহেড পানির পাম্পের মাধ্যমে পৌরবাসীকে বিশুদ্ধ পানির চাহিদা মেটানোর কাজ শুরু হয়। বর্তমানে পৌরসভায় মোট ১০টি পানির পাম্প চালু রয়েছে। আরও পাঁচটি পাম্প চালুর অপেক্ষায়।

পৌরসভার মোট এক লাখ ৭৪ হাজার নাগরিকের জন্য প্রতিদিন পানির চাহিদা ৭৮ লাখ লিটার। সেখানে পৌর কর্তৃপক্ষ শতভাগ চাহিদার মাত্র ৫৫ ভাগ সরবরাহ টার্গেট নিয়েও ব্যর্থ হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপু পানি সরবরাহের ব্যর্থতা স্বীকার করে জানান, পৌরবাসীর পানির সমস্যা সমাধানে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভাগের লো ভোল্টেজের কারণে পানির পাম্প চালাতে সমস্যা হচ্ছে। লো ভোল্টেজে পাম্প চালালে পাম্পগুলির মোটর পুড়ে যাচ্ছে। এতে পানি সাপ্লাইয়ের কাজ আরো বিঘ্ন ঘটছে।

তিনি আরও জানান, বিদ্যুতের এই সমস্যা সমাধানের জন্য স্থানীয় বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভাগ অপারগতা স্বীকার করেছে। বিদ্যুতের সমস্যার সমাধান হলে প্রায় ৭০ হাজার গ্রাহকের মধ্যে ৬০ ভাগ গ্রাহককে পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

এদিকে লো ভোল্টেজের কারণে পানির পাম্প না চললেও পৌর কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে পৌরবাসীর পানির চাহিদা নিশ্চিত করতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে এডিপি ও জাইকার অর্থায়নে এবং জেলা শহর পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় ১২ কাটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে আরও পাঁচটি সাবমার্সিবল পানির পাম্প চালুর অপেক্ষায় রয়েছে।

এগুলি চালু হলে পৌরবাসীর শতকরা ৭৫ ভাগ পানি চাহিদা মেটানো সম্ভব বলে মনে করেন পৌর মেয়র জিপু চৌধুরী।

তবে, সে ক্ষেত্রেও আশঙ্কা রয়েছে লো ভোল্টেজের সমস্যার সমাধান না হলে পানি সরবরাহ সমস্যা রয়েই যাবে।

এদিকে বিদ্যুৎ বিভাগ চুয়াডাঙ্গা ওজোপাডিকোর নিবার্হী প্রকৌশলী মঈনুল ইসলাম লো ভোল্টেজের বিষয়টি স্বীকার করে জানান, চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র এ বিষয়ে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। কিন্তু চুয়াডাঙ্গার জাফরপুর এক লাখ ৩২ হাজার কেবির সাব ন্যাশনাল গ্রিড স্টেশন থেকে প্রতিদিন সরবরাহ ৩৩ হাজার কেবির স্থলে সরবরাহ দিচ্ছে মাত্র ২৪ হাজার কেবি। ফলে লো ভোল্টেজ হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, এর সমাধান একটাই। ন্যাশনাল গ্রিড থেকে প্রয়োজনীয় ৩৩ হাজার কেবির বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা। এছাড়া, বিকল্প রয়েছে ঝিনাইদহ ৩৩ হাজার কেবির সাব গ্রিড। স্টেশনটি যদি চালু হয়, তাহলে চুয়াডাঙ্গা ন্যাশনাল গ্রিডে চাপ কমে যাবে। তখন চুয়াডাঙ্গা ওজোপাডিকো উপকেন্দ্রে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়লে লো ভোল্টেজ সমস্যা থাকবে না। সে ক্ষেত্রে পৌরসভার পাম্প চালাতে আর সমস্যা হবে না।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্মাণাধীন ঝিনাইদহ ৩৩ কেবির সাব গ্রিড স্টেশনটি নির্মাণ কাজ নানা সমস্যাসহ করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে।



এম এ মামুন/সনি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়