ঢাকা     মঙ্গলবার   ০৭ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৪ ১৪৩১

বাবুই পাখি

কাঞ্চন কুমার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:২৯, ১৯ জুলাই ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
বাবুই পাখি

বাবুই পাখি। এখন আর খুব একটা চোখে পড়ে না। দেখা মেলে না এটির বাসা। আগে গ্রামের মেঠোপথ দিয়ে হাঁটলে দেখা যেত সারি সারি তাল, নারিকেল গাছে বাসা বেঁধেছে বাবুই পাখি। কিন্ত এখন কালেভদ্রে দেখা মেলা।

হঠাৎ করেই বাবুই পাখির দেখা মিললো কুষ্টিয়া শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে অজপাড়া গাঁওয়ের নারিকেল গাছে। গ্রামটির নাম বড়বাড়ীয়া কোদালীপাড়া।

মিরপুর উপজেলার সদরপুর ইউনিয়নে গ্রামটির অবস্থান। এই গ্রামের শমসের আলীর বাড়ির পাশের একটি নারিকেল গাছে বাবুই পাখি বেশ কিছু বাসা বেঁধেছে। কী নিখুঁদ কারুকার্য এর বাসায়।

এক সময় এই গ্রামের মতো সদর উপজেলাসহ খোকসা, কুমারখালী, দৌলতপুর, ভেড়ামারা ও মিরপুর উপজেলার তাল ও নারিকেল গাছে দেখা যেত বাবুই পাখির দৃষ্টিনন্দন বাসা। খড়-পাতা দিয়ে উঁচু তাল গাছে চমৎকার বাসা তৈরি করতো বাবুই পাখি।

বাবুই পাখির বাসা যেমন দৃষ্টিনন্দন, তেমনি মজবুত। প্রবল ঝড়-বাতাসেও টিকে থাকে সেই বাসা। শক্ত বুননের এই বাসা টেনেও ছেঁড়া কঠিন।

বাবুই পাখি একাধারে শিল্পী ও স্থপতি। এদের বাসা উল্টানো কলসির মতো দেখতে। বাসা বানানোর জন্য বাবুই কঠোর পরিশ্রম করে। বাসার মধ্যে দুটি নিম্নমুখী গর্তের মতো থাকে। একটি গর্তে ডিম রাখার জায়গা, অন্যটি লম্বা করে তৈরি, যেটি প্রবেশ ও প্রস্থান পথ হিসেবে রাখা হয়।

বড়বাড়ীয়া কোদালীপাড়া গ্রামের শমসের আলী বলেন, বাবুই পাখি এই গ্রামে অনেক ছিলো। এখন আর চোখে পড়ে না। এখন এই একটি গাছে বাসা আছে। অনেকে মাংস খাওয়ার জন্য এই পাখি মারতে চায়। তিনি মারতে দেন না।

স্থানীয় পাখি গবেষক সোহেল রানা বলেন, বাবুই পাখি নিপুণ কারিগর। এক সময় তাল, নারিকেল, খেঁজুর ও সুপারি গাছে বাবুই পাখির বাসা চোখে পড়তো।

মানবাধিকারকর্মী হাসান আলী বলেন, মানুষের অসচেতনতায় এই শিল্পী পাখি বিলুপ্তির পথে। নতুন প্রজন্ম এই পাখি চেনেও না। সবার উচিত বাবুই পাখির বাসা যেন দুষ্ট ছেলেরা নষ্ট না করে তা লক্ষ্য রাখা এবং পাখির অবাধ বিচরণ নিশ্চিত করা।

পরিবেশবিদ গৌতম কুমার রায় বলেন, দেশে তিন প্রজাতির বাবুই পাখি আছে। দেশি বাবুই, দাগি বাবুই ও বাংলা বাবুই। এদের মধ্যে দেশি বাবুই তালগাছ, নারকেলগাছ, খেঁজুর গাছে বাসা বাঁধে। আর বাংলা বাবুই ও দাগি বাবুই এখন বিরল। পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে দেশি বাবুই পাখিও এখন বিলুপ্তর পথে।

 

ঢাকা/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়