গির্জায় কিশোরীকে আটকে রেখে ধর্ষণ, ফাদার গ্রেপ্তার

রাজশাহীতে তানোর উপজেলায় গির্জায় তিনদিন এক কিশোরীকে (১৫) আটকে রেখে ধর্ষণের ঘটনায় সেখানকার ফাদার প্রদীপ গ্রেগরিকে (৫০) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

এদিকে, বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে শারীরিক পরীক্ষার জন্য ওই কিশোরীকে রাজশাহী মেডিক‌্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী নগরীর আমচত্বর সংলগ্ন বিশপ হাউজ থেকে ফাদার প্রদীপ গ্রেগরিকে গ্রেপ্তার করা হয়। রাত ৯টার দিকে তানোর থানায় তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেছেন ভিকটিমের ভাই।

র‌্যাব-৫, রাজশাহীর কোম্পানি অধিনায়ক এটিএম মাইনুল ইসলাম এসব তথ‌্য নিশ্চিত করে জানান, ধর্ষণের খবর জানতে পারার পর থেকেই পলাতক প্রদীপ গ্রেগরিকে গ্রেপ্তারের জন্য তারা প্রচেষ্টা শুরু করেন। পরে রাতে তাকে বিশপ হাউজ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাকে তানোর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

তানোর উপজেলার মুণ্ডুমালা মাহালিপাড়া এলাকার সাধুজন মেরী ভিয়ান্নী গির্জার ফাদার প্রদীপ। এলাকার আদিবাসী খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ওই কিশোরী গত শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে বাড়ির পাশে ওই গির্জার পাশে ঘাস কাটতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে পরদিন রোববার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার ভাই। এরপর সোমবার দুপুরের পর জানা যায়, নিখোঁজ কিশোরী গির্জার ফাদার প্রদীপের ঘরে বন্দি অবস্থায় আছে। পরে কিশোরীর পরিবারের সদস্য এবং এলাকার লোকজন ওই কিশোরীকে উদ্ধার করেন। এরপর সন্ধ্যায় গির্জার ভেতরেই সালিশ বৈঠক বসে।

সেখানে দোষ প্রমাণিত হওয়ায় ফাদার প্রদীপকে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত হয়। আর ভুক্তভোগী ওই কিশোরীকে পরিবারের কাছে না দিয়ে গির্জার ভেতরে সিস্টারদের কাছেই রাখা হয়। তখন বলা হয়, ওই কিশোরীর পরিবারের সদস্যরা থানা থেকে নিখোঁজের জিডি প্রত্যাহার করে নিলে তাকে পরিবারের কাছে পাঠানো হবে। এছাড়া, সাবালিকা হওয়া পর্যন্ত ওই কিশোরীর খরচ বহন করবে গির্জা কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার দুপুরে ওই কিশোরীর ভাই থানায় গিয়ে জানান তার বোনকে পাওয়া গেছে। কিন্তু তারপরও ওই কিশোরীকে পরিবারের কাছে দেওয়া হয়নি। গির্জার প্রধান ফাদার প্যাট্রিক গমেজ ও সালিশি বৈঠকের প্রধান কামেল মার্ডি তাকে আটকে রেখেছেন। খবর পেয়ে সন্ধ্যায় তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুশান্ত কুমার মাহাতো এবং ওসি রাকিবুল হাসান ও গির্জা থেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় রাতে থানায় একটি ধর্ষণের মামলা করেন ওই কিশোরীর ভাই।

ওসি রাকিবুল হাসান জানান, শারীরিক পরীক্ষার জন্য ওই কিশোরীকে আজ  সকালে রাজশাহী মেডিক‌্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার ফাদার প্রদীপকেও আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।