ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

মায়ের সঙ্গে আর দেখা হবে না সোহানার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ৫ ডিসেম্বর ২০২০   আপডেট: ১১:১৫, ৫ ডিসেম্বর ২০২০
মায়ের সঙ্গে আর দেখা হবে না সোহানার

পিতৃহারা সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সোহানা খাতুন আর তার মায়ের সঙ্গে দেখাও করবে না, কথাও বলবে না। এমন কী আর স্কুলেও যাবে না। তার গার্মেন্টসকর্মী মা সাজেদা বেগমের সঙ্গে দেখা করার জন্য ঢাকা যাওয়ার পথে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয় সোহানা।

সঙ্গে তার চাচাতো ভাইসহ আরও ৫ জন বাসযাত্রী নিহত হয়েছেন। তারা সবাই পীরগঞ্জের বাসিন্দা। শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) ভোরে মির্জাপুর উপজেলার কুরনি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সায়েদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ওসি জানান, রংপুর থেকে ছেড়ে আসা সেবা ক্ল্যাসিক পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস মির্জাপুর উপজেলা কুরনি এলাকায় বিকল হয়ে পড়ে। পরে মেরামতের জন্য রাস্তার পাশে দাঁড় করানো হয় বাসটি। সকাল ৭টার দিকে ঢাকাগামী সবজি ভর্তি একটি ট্রাক বাসটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ৬ জন নিহত হয়।

নিহতরা হলেন— রংপুরের পীরগঞ্জে শানেরহাট ইউনিয়নের হরিপুর শাহাপুর (রাজাকপুর) গ্রামের মৃত লুলু মিয়ার মেয়ে সোহানা। সে শানেরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। একই ইউনিয়নের ধল্যাকান্দি গ্রামের জয়নাল মিয়ার ছেলে রিকশাচালক আশরাফুল ইসলাম (৩২), একই গ্রামের সেরাজুল ইসলাম (৩০), খোলাহাটি গ্রামের মৃত: মছির উদ্দিনের ছেলে সৈয়দ আলী (৩৫), হরিরাম সাহাপুর রাজাকপুর গ্রামের সোবহানের ছেলে শওকাত আলী (১২), একজন এখনো অজ্ঞাত রয়েছে। পরে হাসপাতালে নেয়া হলে আরও দুজনের মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। গোড়াই হাইওয়ে থানার ওসি মোজাফ্ফর হোসেন ও পুলিশ সার্জেন্ট মো. রোবায়েত হোসেন জানান, ঘটনাস্থলে ৪ জন ও হাসপাতালে আরোও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন আরও ৫ জন। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহতদের পরিবারের সাথে স্থানীয় প্রশাসন কোন খোঁজ খবর নেয়নি বলে জানা গেছে। সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহতদের লাশ পীরগঞ্জে এসে পৌঁছায়নি।

এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ উপজেলা ইউএনও বিরোদা রানী রায় জানান, চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ‌্য, মৃত লুলু মিয়ার স্ত্রী সাজেদা বেগম পরিবারের অভাব মেটাতে মেয়ে সোহানা ও ছেলে লিটনকে বাড়িতে রেখে ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরিতে যান। সোহানা তার মায়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য চাচাতো ভাই ছোবহান মিয়ার ছেলে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র শওকাত মিয়াকে সাথে নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে বড়দরগা বাসস্ট্যান্ড থেকে ‘সেবা ক্লাসিক পরিবহনে’ চড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। ওই বাসে পীরগঞ্জের আরও ৪ জন উঠেন। ঢাকা যাওয়ার পথে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয় সোহানা।

নজরুল/আমিনুল/বুলাকী

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়