ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

লাল শাপলায় ভরা ডিবির হাওর

আব্দুল্লাহ আল নোমান, সিলেট  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:১০, ৮ ডিসেম্বর ২০২০   আপডেট: ১১:০১, ৮ ডিসেম্বর ২০২০

লাল শাপলা ফুলে ভরে গেছে ডিবির হাওর। আর সেই সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন ভোরে সেখানে ছুটে আসছেন হাজারও মানুষ। ছোট নৌকায় করে তারা ঘুরে বেড়াচ্ছেন হাওরে; উপভোগ করছেন সবুজ পাতার ফাঁকে লাল শাপলার অপরূপ সৌন্দর্য। 

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী ডিবির হাওর, কেন্দ্রী হাওর, হরফকাটা বিল আর ইয়াম বিলে প্রতিবছরই ফোটে লাল শাপলা। এই চার জলাশয়ের অবস্থান ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে জিরোপয়েন্ট জুড়ে। লাল শাপলায় ভরা হাওরগুলো নজর কাড়ছে সকলের।


 
স্থানীয়রা জানান, বর্ষাকাল শেষ হতেই হাওরে ফুটতে থাকে লাল শাপলা। শরতের শেষভাগ থেকে শীতের শুরু পর্যপ্ত শাপলা সৌন্দর্য ছড়ায়। তবে সবচেয়ে বেশি শাপলার দেখা মেলে হেমন্তের মাঝামাঝি সময়ে। এ সময়ে ভিড় বাড়ে দর্শনার্থী আর প্রকৃতিপ্রেমির। 


 
শনিবার (৫ ডিসেম্বর) ছুটির দিন হওয়ায় হাওরে অন্য সময়ের তুলনায় বেশি ভিড় ছিলো। কেউবা এসেছেন পরিবার নিয়ে মাইক্রোবাসে চড়ে; কেউ লেগুনায়। তবে মোটরসাইকেলে আগত দর্শনার্থীর সংখ্যা ছিল বেশি। সেখানে কথা হয় ট্যুর অপারেটর ‘ট্রাভেলার্স গ্রুপ অব সিলেটের’ মাসুদ আহমদ রনির সঙ্গে। তিনি বলেন, তারা ডিবির হাওরে শর্ট ট্যুর পরিচালনা করছেন। গত ১৫ দিনে তাদের চারটি ট্যুর সম্পন্ন হয়েছে। প্রতি ট্যুরে ৩০-৩৫ জন দর্শনার্থী তাদের সঙ্গী হয়েছেন বলে জানান তিনি। 


 
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইফুর রহমান বলেন, লাল শাপলার সৌন্দর্য দেখতে প্রতিবারই তিনি ডিবির হাওর ঘুরতে আসেন। এ বছরও এর ব্যতিক্রম হয়নি। তিনি ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের হাওরের সৌন্দর্য রক্ষায় সচেতন থাকার পাশাপাশি শাপলা না ছিঁড়তে আহ্বান জানান। 

হাওরের ফুল এবং সৌন্দর্য রক্ষায় করা হয়েছে কমিটি। ডিবির হাওর লাল শাপলা সুরক্ষা কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, হাওরে ফুল ছিঁড়া নিষেধ। নৌকার মাঝিরাও পর্যটকদের ফুল ছিঁড়তে নিষেধ করেন। সুরক্ষা কমিটির পক্ষ থেকেও সার্বক্ষণিক বিষয়টি নজরদারি করা হয়। 


 
ডিবির হাওরর কেন্দ্রী বিলে ডুবিয়ে হত্যা করা হয় জৈন্তিয়া রাজ্যের রাজা রাম সিংহকে। এই হাওরে তার সমাধিসৌধ বলে উপজেলা প্রশাসনের সাঁটানো সাইনবোর্ড থেকে জানা যায়। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘এই হাওরে রয়েছে রাজা বিজয় সিংহের সমাধিসৌধ। ১৭৭৪ সালে তিনি রাজা হন এবং মাত্র পাঁচ বছর রাজত্বের পর মারা যান। তার শাসন আমলে পাহাড় ও সমতলের বাসিন্দাদের মাঝে বিদ্রোহ দেখা দেয়। এরপর সম্মিলিত ষড়যন্ত্রে তাকে কেন্দ্রী বিলে নৌকা বাইচের মধ্যে হত্যা করা হয়। তাকে সেখানেই রাজকীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।’ 


 
যেভাবে যাবেন শাপলার বিল: সিলেট নগরীর সোবহানীঘাট থেকে জাফলংগামী বাসে করে যাওয়া যাবে জৈন্তাপুর বাজারে। সেখান থেকে ব্যাটারিচালিত টমটম নিয়ে সরাসরি বিলে যাওয়া যায়। সময় লাগবে এক থেকে দেড় ঘণ্টা। বাসের ভাড়া জনপ্রতি ৫০ টাকা। আর টমটম ১০ টাকা করে ভাড়া নিয়ে থাকে।

এছাড়াও সিলেট নগরী থেকে সরাসরি সিএনজিচালিত অটোরিকশা অথবা লেগুনা রিজার্ভ করেও যাওয়া যাবে ডিবির হাওরে। হাওরে নৌকা নিয়ে ঘুরতে হলে ৪০ মিনিটের জন্য খরচ করতে হবে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। 

ঢাকা/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়