ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ভাড়া না পেয়ে ঘর তালাবদ্ধ, বদ্ধ ঘরে শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২৩:১০, ১৩ জানুয়ারি ২০২১   আপডেট: ২৩:৫০, ১৩ জানুয়ারি ২০২১
ভাড়া না পেয়ে ঘর তালাবদ্ধ, বদ্ধ ঘরে শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ

নগরীতে অগ্রীম ঘর ভাড়া না পেয়ে পাঁচ দিন ধরে দুগ্ধপোষ্য শিশু সন্তানসহ ভাড়াটিয়া পরিবারকে তালাবদ্ধ করে রাখে বাড়ি মালিক। 

তালাবদ্ধ অবস্থায় বালতির পানিতে ডুবে ভাড়াটিয়ার মেয়ে আজিজা তাসমিয়ার (৬ মাস) মুত‌্যুর অভিযোগ উঠেছে। খুলনা মহানগরীর হরিণটানা রিয়াবাজার এলাকায় অমানবিক এ ঘটনা ঘটেছে। 

এদিকে, বুধবার (১৩ জানুয়ারি) শিশুটির বাবা-মা এ ঘটনায় বাড়িওয়ালা মো. নওশেরকে দায়ি করে থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ তা গ্রহণ না করে অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করেছে পুলিশ। এ বিষয়ে আদালতে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালে ডিসেম্বর মাসে কাঠের ডিজাইন মিস্ত্রী ইমদাদুল ইসলাম ও তার স্ত্রী তামান্না মাসে চার হাজার টাকা চুক্তিতে রিয়াবাজার এলাকায় একতলা বাড়ির দুইটি কক্ষ ভাড়া নেন। কিন্তু জানুয়ারি মাসের অগ্রিম ভাড়া দিতে না পারায় ৬ জানুয়ারি থেকে ঘরে শিশু সন্তানসহ তামান্নাকে তালাবদ্ধ করে রাখে বাড়িওয়ালা নওশের। এসময় তামান্নার স্বামী মোংলা পোর্টের ঝিউধরা এলাকায় কাঠের কাজে গিয়েছিলেন।

তামান্না ইসলাম জানান, তালাবদ্ধ অবস্থায় গত ১১ জানুয়ারি দুপুরে শিশুটি হঠাৎ খেলতে গিয়ে বালতির পানির মধ্যে উল্টে যায়। ঘরে এসে তিনি শিশুটিকে ওই অবস্থা থেকে উদ্ধার করলেও বাইরে থেকে ঘর তালাবদ্ধ থাকায় চিকিৎসকের কাছে নিতে পারেননি।

তিনি বলেন, ‘এভাবে আর যেনো কোনো মায়ের বুক খালি না হয়। আর কোনো পাষণ্ড বাড়িওয়ালা যেন এভাবে অন্যায় করতে না পারে। আমি বাড়িওয়ালার বিচার দাবি করছি।’

তামান্নার স্বামী ইমদাদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি নিম্ন আয়ের মানুষ। সংসারে অভাব অনটন থাকলেও সন্তানকে জীবন দিয়ে ভালোবাসতাম। কিন্তু বাড়িওয়ালার নিমর্মতায় আজ সেই সন্তানকে হারাতে হলো।’

স্থানীয় জলমা ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম লিটন জানান, শিশুটির মা জানালা দিয়ে চিৎকার দিলে আশেপাশের লোকজন তালা ভেঙ্গে তাদেরকে উদ্ধার করে। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে শিশুটি মারা যায়। এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম জানান, অসহায় বাবা-মা থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। এ ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করা হবে। 

এদিকে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাড়িওয়ালা মো. নওশের। 

এ বিষয়ে লবণচরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সমীর কুমার সরদার বলেন, ‘মায়ের অবহেলার কারণেই তার শিশু সন্তান পানিতে ডুবে মারা গেছে। এ কারণেই অপমৃত্যু মামলা নেওয়া হয়েছে। তবে, বাড়িওয়ালা বাইরে থেকে ঘর তালাবদ্ধ করেছিল কি-না তা জানা নেই।’

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান/সনি

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়