শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ গুমের চেষ্টা

খুলনা মহানগরীর দৌলতপুওে বাড়ির ছাদে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে তৃতীয় শ্রেণির স্কুলছাত্রী অঙ্কিতা দে ছোঁয়াকে (৮) হত্যার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ।

কয়েক দফা লাশ ওই বাড়ির বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রাখার পর বুধবার (২৭ জানুয়ারি) রাতের কোনো এক সময় বিউটি পার্লারের বাথরুমে লাশটি রাখা হয়। এ ঘটনায় ঐ বাড়ির দুই নারীসহ ৮ জনকে নগরীর দৌলতপুর থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

নগরীর দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) মো. আমিনুল ইসলাম বিষয়টি জানিয়েছেন করেছে।

পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, ২২ জানুয়ারি বিকেলে ফুসলিয়ে খুলনা মহানগরীর দৌলতপুরের পাবলা বণিকপাড়ার ‘বীণাপানি’ ভবনে নেওয়া হয় অঙ্কিতাকে। এরপর থেকে সে নিখোঁজ হয়।

পুলিশ প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে, ওই দিন সন্ধ্যায় বীণাপানি ভবনের ছাদে প্রথমে তাকে ধর্ষণ ও পরে জুতার ফিতা, নাইলন ও জালের দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এরপর লাশ একটি প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে সিঁড়ি ঘরে লুকিয়ে রাখা হয়। সিঁড়ি ঘরের ওই স্থান ও ছাদের একাধিক স্থানে রক্তের দাগ, ভেজা কাপড় ও বেশ কিছু আলমত দেখে পুলিশ তা নিশ্চিত করেছে। পুলিশের তদন্তে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দুইজনের সম্পৃক্তার প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে। এর একজন ওই ভবনের মালিক প্রীতম ও বাড়ির কেয়ারটেকার শ্যামল। তাদের দুজনকেই আটক করেছে পুলিশ। এছাড়া, বাড়ির ছাদের চাবি থাকা নারী অনিতা দত্ত ও তার মেয়ে সৃষ্টি দত্তকেও শুক্রবার দুপুরে আটক করে পুলিশ। এদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

নগরীর দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) মো. আমিনুল ইসলাম জানান, ওই বাড়ির ছাদে রক্তের দাগ পেয়ে ধারণা করা হচ্ছে শিশুটিতে ওই ভবনের ছাদেই হত্যা করা হয়েছে।

এদিকে, স্কুলছাত্রী অঙ্কিতা দে ছোঁয়া হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে শনিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে নগরীর দৌলতপুরে প্রতিবাদী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।

এ সময় বক্তারা অবিলম্বে স্কুলছাত্রী অঙ্কিতা দে ছোঁয়া হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট দৌলতপুর শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শ্যামল সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন— অ্যাডভোকেট মিনা মিজানুর রহমান, শাহীন জামান পন, মিজানুর রহমান বাবু প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, ২২ জানুয়ারি শিশু ছোঁয়া নিখোঁজ হওয়ার পর নগরীর দৌলতপুর থানায় প্রথমে জিডি ও পরে অপহরণ মামলা করেন করেন বাবা সুশান্ত দে। ২৮ জানুয়ারি তার লাশ উদ্ধারের পর অপহরণ মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়েছে।