ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

সাংবাদিক মুজাক্কির হত্যা: এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পিবিআই

নোয়াখালী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:২১, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১   আপডেট: ১৭:৪৫, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১
সাংবাদিক মুজাক্কির হত্যা: এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পিবিআই

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির হত‌্যার মামলায় এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) মুজাক্কিরের ভাই নূর উদ্দিন রাইজিংবিডিকে বলেছেন, ‘মুজাক্কির হত্যার ঘটনায় আমার বাবা বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেছিলেন। যেহেতু আমরা ওই দিন ঘটনাস্থলে ছিলাম না, তাই আমরা কাউকে না দেখায় মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করেছি। ওই রাতেই মামলাটি পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়। আমরা আশাবাদী, পিবিআই দ্রুত মুজাক্কিরের হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করবে।’

মুজাক্কিরের বাবা নোয়াব আলী মাস্টার বলেন, ‘আমি বৃদ্ধ মানুষ। যেকোনো দিন আমার মৃত‌্যুর ডাক আসতে পারে। কিন্তু তার আগেই খুনিরা আমার ছোট সন্তানকে কেড়ে নিয়েছে। কী অপরাধ ছিল আমার ছেলের? সে তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিল। পৃথিবী থেকে যাওয়ার আগে যেন ছেলের হত্যাকারীদের বিচার দেখে যেতে পারি।‘

মুজাক্কিরের মা মমতাজ বেগম বলেন, ‘সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে যেন সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হয়। আমার ছেলে পড়ালেখা ও সাংবাদিকতার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কাজও করতো।’ 

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘মামলার তদন্তভার পাওয়ার পর আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছি। প্রতিটি বিষয় আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।’ মামলা তদন্তের স্বার্থে এ বিষয়ে বেশি কিছু বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন তিনি।

এদিকে, সহকর্মী মুজাক্কির হত্যার প্রতিবাদে আগামীকাল ১ মার্চ (সোমবার) সকাল ১০টায় নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সামনে থেকে কালো পতাকা মিছিল ও তিন দিনের জন্য কালো ব্যাজ ধারণের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন নোয়াখালীতে কর্মরত সাংবাদিকরা। ইতোমধ্যে তারা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতারা।

প্রসঙ্গত, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চাপরাশিরহাট পূর্ব বাজারে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলি হয়। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশও কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ও শটগানের গুলি ছোড়ে। সংবাদ সংগ্রহ ও ছবি-ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে ত্রিমুখী সংঘর্ষের মুখে পড়ে গুলিবিদ্ধ হন সাংবাদিক মুজাক্কিরসহ কয়েকজন। আশঙ্কজনক অবস্থায় মুজাক্কিরকে প্রথমে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ঢাকা মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে ২০ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টা ৪৫মিনিটে তার মৃত্যু হয়। মুজাক্কির অনলাইন নিউজ পোর্টাল বার্তা বাজারের নোয়াখালী প্রতিনিধি ছিলেন।

সংঘর্ষ, গোলাগুলির ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। এর মধ্যে পুলিশের মামলা দুটি গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এবং বাদলের করা মামলাটি থানা পুলিশ তদন্ত করছে। মুজাক্কির মারা যাওয়ার পর তার বাবা গত মঙ্গলবার কোম্পানীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই রাতেই মামলাটি পিবিআই’র কাছে হস্তান্তর করা হয়। তদন্তের দায়িত্ব পেয়েই পিবিআই ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে।

সুজন/রফিক

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়