ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

গার্মেন্টস খোলার ‘খবরে’ ঝুঁকি নিয়ে ঢাকায় ফিরছেন শ্রমিকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪১, ২৭ জুলাই ২০২১   আপডেট: ১৩:৪২, ২৭ জুলাই ২০২১
গার্মেন্টস খোলার ‘খবরে’ ঝুঁকি নিয়ে ঢাকায় ফিরছেন শ্রমিকরা

ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা ফিরছেন অনেক শ্রমিক

করোনা সংক্রমণ রোধে সারাদেশে চলছে লকডাউন। এ কারণে বন্ধ রয়েছে পোশাক কারখানাসহ সরকারি-বেসরকারি অফিস। তবে কারখানা খোলার ‘খবর’ পেয়ে ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা ফিরছেন অনেক শ্রমিক।

মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় দেখা গেছে, শত শত পোশাক কারখানার শ্রমিকরা হেঁটে ও রিকশা করে গাজীপুর ও ঢাকাসহ আশপাশের শিল্পাঞ্চলে যাচ্ছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে অধিকাংশ লোকজনই পোশাক কারখানায় কাজ করেন। চাকরি বাঁচাতে কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, জামালপুর থেকে আসছেন তারা। কারও কাঁধে-কোলে বাচ্চা। আবার কারও দুই হাতে কাপড়ের ব‌্যাগ।

একই অবস্থা দেখা গেছে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায়। উত্তরবঙ্গ থেকে নানান কৌশলে চন্দ্রা ত্রিমোড় এসে কেউবা যাচ্ছেন ঢাকা, কেউবা যাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের বিভিন্ন অঞ্চলে। ভেঙে ভেঙে এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে গুণতে হয়েছে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া।

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি থেকে ফজরের নামাজ পড়ে রওনা হয়েছেন আশরাফ আলী। কাজ করেন গাজীপুরের টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকার একটি পোশাক কারখানায়। তিনি বলেন, ‘গতকাল কারখানা থেকে ফোন আসছিল কাজে যোগদান না করলে চাকরি থাকবে না। তাই বাধ্য হয়ে ফজর ওয়াক্তে ৫০০ টাকা দিয়ে সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া করে এসেছি সালনা পর্যন্ত। সালনা থেকে ৫০ টাকা রিকশা ভাড়া দিয়ে আসলাম চৌরাস্তা। এখান থেকে আবার রিকশা নিয়ে বাসায় যাবো।’

স্ত্রী মারুফাকে সঙ্গে নিয়ে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট থেকে রিকশা, অটোরিকশা আবার মোটরসাইকেল ভাড়া করে গাজীপুর পর্যন্ত এসেছেন লিটন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমাদের সুপারভাইজার রাতে এসএমএস করেছেন। বলেছে শিপমেন্ট আছে। যেভাবেই হোক কাজ করতে হবে। তবে এ খবর কাউকে না বলার জন‌্য বলেছেন। বউ-আমি দুজনেই একই কারখানায় কাজ করি। তাই দুই জন একসঙ্গে রওনা দিয়েছি। দুটি সন্তান আছে। রাস্তাঘাটে গাড়ি চলে না, তাই ওদের গ্রামে রেখে এসেছি।’

লিটন আহমেদের মতো আরও অনেকেই জানান, অফিসিয়াল ঘোষণা না দিলেও সবাই কোনো না কোনো মাধ্যমে সংবাদ, ফোন কল পেয়ে ঝুঁকি নিয়ে কষ্ট করে ফিরে আসছেন কর্মস্থলে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক উত্তর) মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমরা মহাসড়কের চেকপোস্টগুলোতে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। কিন্তু শত শত মানুষ হেঁটে হেঁটে চেকপোস্ট অতিক্রম করছে। চেকপোস্টে বাধাপ্রাপ্ত হলে ভিন্ন কোনো পথ দিয়ে চলাচল করছে।’

তবে বেশ কয়েকটি কারখানার মালিক পক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে যোগাযোগ করা হলে অনেকই বিষয়টি অস্বীকার করেন। আবার কেউ কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।

রেজাউল করিম/ইভা 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়