ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

দেড় বছর কারাগারে সাংবাদিক জামাল, অনাহারে পরিবার

বরগুনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:১৭, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১   আপডেট: ১৭:৩৩, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
দেড় বছর কারাগারে সাংবাদিক জামাল, অনাহারে পরিবার

মেয়ের সঙ্গে সাংবাদিক মীর জামাল

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া মামলায় দেড় বছর ধরে কারাগারে আছেন সাংবাদিক মীর জামাল। নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে চেষ্টা করেও জামিন পাননি তিনি। পরিবারের বড় সন্তানকে জামিন করাতে গিয়ে সর্বস্ব হারিয়ে বর্তমানে অর্ধাহার-অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন জামালের বাবা-মা। সন্তানকে ফিরে পাওয়ার আকুতি জানিয়েছেন বাংলানিউজ২৪.কমের বরগুনা প্রতিনিধি জামালের মা।  

এছাড়া দীর্ঘদিন বাবার আদর স্নেহ থেকে বঞ্চিত জামালের মেয়ে পুষ্টির অভাবে এখন নানা রোগে আক্রান্ত। অসহায় মীর জামালের পাশে দাঁড়াতে সাংবাদিক নেতাদের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন স্থানীয় প্রবীণ সাংবাদিকরা।

জামালের মা মোসা. রুনু বেগম বলেন, ‘দেড় বছর ধরে বড় ছেলে জামাল কারাবন্দি। দিনের পর দিন অপেক্ষা করি ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরে একটু কান্না করবো। কিন্তু ছেলেকে কাছে পাইনি। করোনার জন্য কারাগারে গিয়ে দেখাও করতে পারিনি। ছেলে জীবিত কিন্তু দেড় বছর আমি তাকে দেখতে পাইনি। আমি মনে হয় আমার ছেলেকে দেখে মরতে পারবো না। ’

জামালের বাবা মো. জালাল মীর বলেন, ‘ছেলের জামিন করাতে গিয়ে নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। টাকা শেষ হওয়ার পরে জমি বিক্রি করেও ছেলেকে জামিনের চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমরা ব্যর্থ। এখন আমাদের তিন বেলা খাবার জোটেনা। জামালের মা অসুস্থ, একটা ওষুধ কিনে দেওয়ার সামর্থ্য নেই আমার। ’

কারাবন্দি সাংবাদিকের স্ত্রী লিমা বেগম বলেন, ‘পুষ্টিকর খাবারের অভাবে অনেকটাই মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছে আমাদের মেয়ে তাহিয়া। বঞ্চিত হয়েছে বাবার ভালোবাসা থেকে। মেয়ের পায়ে একটু সমস্যা দেখা দিয়েছে। টাকার অভাবে চিকিৎসকও দেখাতে পারছি না। ’

বরগুনার প্রবীণ সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি হাসান ঝন্টু বলেন, ‘জামাল বরগুনায় সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের প্রচার করতেন। একই সঙ্গে তিনি বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস দপ্তরের অনিয়ম দুর্নীতি প্রচার করে অসংখ্য প্রতিবেদন করেছেন। জামাল সব চোর-বাটপারদের চোখের শুল হয়েছিলো। এসব চোরদের সঙ্গে কিছু সাংবাদিকদের যোগসাজশে জামালকে ফাসানো হয়েছে।’

গত বছরের ২৪ এপ্রিল বরগুনা সদরের পানামা রোড এলাকার লামিয়া নামে এক নারী সম্মানহানি ও তাদের বসতঘরে টাকা ও স্বর্নালংকার লুটের অভিযোগ করেন। পরে ওই নারী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিক মীর জামালসহ ৭ জনের নামে মামলা করেন। একই বছরের ৬ মে লামিয়ার করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জামাল ও নিউজ টোয়েন্টিফোর টেলিভিশনের প্রতিনিধি সুমন সিকদারসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিছুদিন পরে সুমন সিকদারসহ ৫ জনের জামিন হলেও কারাগারেই আছেন জামাল।

ইমরান/মাসুদ

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়