ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

চাঁদা না পেয়ে শিশুর নখ উপড়ে ফেললো যুবলীগ কর্মীরা

নাটোর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৫৪, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১   আপডেট: ০১:০৬, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
চাঁদা না পেয়ে শিশুর নখ উপড়ে ফেললো যুবলীগ কর্মীরা

নাটোরে চাঁদার টাকা আদায় করতে মধ্যযুগীয় কায়দায় ১৫ বছর বয়সী ফয়সাল হোসেন নামের এক দোকান কর্মচারীর আঙ্গুলের নখ উপড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ৫ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং তিনিজন নাম না জানা ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করছেন ফয়সালের দোকান মালিক মোবাইল ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম।

পরে অভিযান চালিয়ে সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) যুবলীগের দুই কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নাটোর সদর উপজেলার নবীনগর গ্রামের ইসাহাক আলীর ছেলে একরাম হোসেন ওরফে সুমন (৩৫) এবং শহরের চকরামপুর মহল্লার আনিসুর রহমানের ছেলে মো. আবির হোসেন (২৬)। তারা দুই জনই যুবলীগ কর্মী। এ সময় পুলিশ মুক্তিপণ হিসেবে দেওয়া আর-ওয়ান-ফাইভ মডেলের একটি মোটরসাইকেল ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে।

মামলার আসামিরা হলেন, নাটোর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রনি আহমেদ, তার ভাই রবিউল আওয়াল বাপ্পি, পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুল্লাহ হিল শুভ, একরাম হোসেন ওরফে সুমন, মো. আবির হোসেনসহ ৮ জন।  

পুলিশ ও ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম জানান, অনেক দিন থেকেই ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে যুবলীগ কর্মী একরাম হোসেন সুমনের সঙ্গে আব্দুস সালামের বিরোধ চলছিল। এরই জেরে শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শহরের স্টেশন বাজার এলাকা থেকে আবির এবং সুমনের সহযোগিতায় রবিউল আওয়াল বাপ্পি আব্দুস সালাম ও তাঁর দোকানের কর্মচারী ফয়সালকে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায়। তাদের শহরের কানাইখালী এলাকায় যুবলীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

তারা আরো জানান, সেখানে নেওয়ার পর ফয়সালকে চোর বলে দাবি করে তার কাছে তিনলাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন অভিযুক্তরা। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে আব্দুস সালামের সামনেই ফয়সালের বাম হাতের তর্জনী আঙ্গুলের নখ উপড়ে ফেলা হয়। এসময় বাড়ি থেকে ওই ব্যবসায়ীকে তার স্ত্রীর গহণা নিয়ে আসতে বলা হয়।

আব্দুস সালাম জানান, তিনি তার ব্যবহৃত আর-ওয়ান-ফাইভ মডেলের মোটরসাইকেলটি এ সময় অভিযুক্তদের দিয়ে দেন। কিন্তু তারা আরো দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। পুলিশকে জানালে মেরে ফেলা হবে বলেও অভিযুক্তরা হুমকি দেয়। তিনি বিষয়টি নাটোর থানা পুলিশকে মৌখিকভাবে জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ফয়সাল ও মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করে।

নাটোর জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বলেন, এটি একটি নৃশংস ঘটনা। এমন ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’

নাটোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর রহমান জানান, খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আহত ফয়সালকে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মোবাইল ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম থানায় পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে ও তিনজন নাম না জানা ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। সব আসামিকেই আইনের আওতায় আনা হবে।

আরিফুল/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়