ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

কক্সবাজার সৈকতে প্রতিমা বিসর্জনের বৃহত্তম আয়োজন

তারেকুর রহমান, কক্সবাজার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৩২, ১৫ অক্টোবর ২০২১   আপডেট: ২২:৫৫, ১৫ অক্টোবর ২০২১
কক্সবাজার সৈকতে প্রতিমা বিসর্জনের বৃহত্তম আয়োজন

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে বৃহৎ আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রতিমা বিসর্জনে সমাপন ঘটেছে শারদীয় দুর্গাপূজার। এই বিসর্জনে ভক্ত, পূজারী, পর্যটক ও দর্শনার্থীসহ হাজার হাজার মানুষের সমাবেশ ঘটে। বিজয়া দশমী বিসর্জন অনুষ্ঠান অসাম্প্রদায়িক চেতনার মিলন মেলায় পরিণত হয়।

শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে আসতে থাকে জেলার বিভিন্ন মন্দিরে তৈরি প্রতিমা। এ সময় হাজার হাজার ভক্ত, পূজারী ও দর্শনার্থীরা ভিড় জমায়। একে একে সমুদ্র সৈকত লোকে লোকারন্য হয়ে পড়ে। এ সময় ডাক-ঢোল, কাঁসর, শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত।

বিজয়া দশমীতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বিদায়ের সুর ভক্তদের মাঝে। ভক্তারা জানায়, মর্ত্য ছেড়ে দুর্গতিনাশিনী মা দুর্গা কৈলাশে ফেরার পথে অসূর বধ ও অকল্যাণ দূর করে ভক্তদের জন্য রেখে যাচ্ছেন সুখ, সমৃদ্ধি ও আর্শীবাদ।

তারা আরো জানায়, অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভ ও কল্যাণ এবং সকল মানুষের মধ্যে নিরন্তর শান্তি ও সম্প্রীতির আকাঙ্খা আর করোনাভাইরাস মুক্ত করার জন্য মা দুর্গার প্রতি প্রার্থনা ছিলো সকল ভক্তের। বিজয়া দশমীর সকালে মন্ডপে মন্ডপে ১০ উপাচারে অনুষ্ঠিত হয় দেবী দুর্গার বিহিত পূজা। শাপলা, শালুক আর বলিদানের মধ্য দিয়ে নানা আনুষ্ঠানিকতা পালন করে দেবীর পূজা দেন তারা। সনাতন বিশ্বাসে, বোধনে অরুণ আলোর অঞ্জলি নিয়ে আনন্দময়ী মা দুর্গার আগমন ঘটে। টানা পাঁচদিন মৃন্ময়ীরূপে মন্ডপে মন্ডপে থেকে ফিরে যান কৈলাশে স্বামী শিবের সান্নিধ্যে। দূর কৈলাশ ছেড়ে মা পিতৃগৃহে আসেন এবং বিজয়া দশমীতে বিদায় নেন।

মানব হৃদয়ে পূণ্যের পুষ্পরাশি প্রস্ফুটিত এবং অশুভকে বিনাশ করে আগামী বছর দেবী দুর্গা আবারও আসবেন ধরাধামে, এমন প্রত্যাশা ভক্তদের।

এদিকে বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ। জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট রনজিত দাশের সভাপতিত্ব ও সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। 

এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ, কক্সবাজার স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক শ্রাবস্তী রায়, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান মেয়র, জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান, কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে হেলালুদ্দীন আহমেদ বলেন, 'জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চেয়েছিলেন এই দেশ হবে সবার। এখানে হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ভেদাভেদ থাকবে না। সম্প্রীতির বন্ধনে সকলেই শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করবে প্রিয় বাংলাদেশে। ধর্ম যার যার উৎসব সবার। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা বিসর্জনের জন্য যে মহাসমাবেশ ঘটেছে, এই একতা অপশক্তিকে রুখে দেওয়ার দৃষ্টান্ত। এই দেশে যার যার ধর্ম তারা পালন করবে। ধর্ম পালনে যে বাধা দিয়েছে, তাদের জন্য সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।'

এ সময় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু সুফিয়ান, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি রেজাউল করিম, জেলা জাসদের সভাপতি নইমুল হক চৌধুরী টুটুল, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি নজিবুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল করসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
 

/বকুল/

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়