ঢাকা     বুধবার   ০৮ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

মুক্তিযোদ্ধা নুরল হকের চাওয়া একটি পাকা ঘর

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:১৬, ২০ ডিসেম্বর ২০২১  
মুক্তিযোদ্ধা নুরল হকের চাওয়া একটি পাকা ঘর

দীর্ঘ ২৫ বছর বস্তিতে বাস করছেন মুক্তিযোদ্ধা নুরল হক (৭৩)। শরীরে যতদিন শক্তি ছিল রিকশা চালিয়ে টেনেছেন সংসারের চাকা। এখন এই বৃদ্ধ বয়সে টিনের ভাঙা ঘরেই কাটে তার দিনের অধিকাংশ সময়।

কুড়িগ্রাম পৌরসভার জেনারেল হাসপাতালসংলগ্ন হাসপাতালপাড়া বস্তিতে কথা হয় নুরল হকের সঙ্গে। কেমন আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার মাসিক ভাতা ২০ হাজার টাকা করায় এখন একটু ভালোভাবে সংসার চালাতে পারলেও, শরীরে বাসা বেঁধেছে রোগ। মৃত্যুর আগে রেহাই নাই।’

১৯৭১ সালে ‘যার যা আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকতে হবে’ শেখ মুজিবুর রহমানের বজ্রকণ্ঠে অনুপ্রাণিত হয়ে যুদ্ধে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন নুরল হক। বয়স তখন ২৩। ভারতে চৌধুরী বর্ডারে গিয়ে নাম লেখান। পরে ওখান থেকে তাকে কোচবিহারের তাবুরহাটে পাঠানো হয়। সেখানে একমাস প্রশিক্ষণ নেন। এরপর ঝাউকুটিতে একমাস প্রশিক্ষণ হয় অস্ত্র দিয়ে।

নুরল হক দাসের হাট, রাজারহাট, মধুপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। সর্বশেষ তিস্তায় পাকসেনারা ব্রিজ ভেঙে দিলে সেখানে তাদের সঙ্গে গোলাগুলি হয়। তাদের ধাওয়া করে কাউনিয়া পর্যন্ত যান।

দেশ স্বাধীন হয়েছে ৫০ বছর হলো। এই বৃদ্ধ বয়সে আর কী চাওয়ার আছে? উত্তরে বৃদ্ধ এই মুক্তিযোদ্ধা বলেন, নিজের ছোট্ট জমি ছিল তাই রক্ষা। না হলে বাণের জলে ভেসে যেতে হতো। কিন্তু ঘর দিয়ে বর্ষা মৌসুমে পানি পড়ে। শীতে ঘরের ফাঁক দিয়ে ঢোকে ঠান্ডা বাতাস। শেষ বয়সে একটা ঘর দরকার আর নাতির একটা সরকারি চাকরি চাই।

নুরল হকের মেয়ের জামাই আবুল কাশেম জানান, পাকা ঘরের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, আমার কাছে নতুন বরাদ্দ এসেছে। মুক্তিযোদ্ধা নুরল হকসহ যারা ভূমিহীন মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন তাদের জমিসহ বাড়ির ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। 
   
  

     

সৈকত/তারা 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ