বিএডিসি উপপরিচালকের বিরুদ্ধে কিশোরকে বলাৎকারের অভিযোগে মামলা

শেরপুরে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) হিমাগারের উপপরিচালক (বীজ আলু) মো. খলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে এক কিশোরকে (১৩) বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনায় ১ আগস্ট ওই কিশোরের পিতা বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা করেছেন। 

খলিলুর রহমান ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার ছলিমপুর গ্রামের বাসিন্দা। মঙ্গলবার জেলা সদর হাসপাতালে ওই কিশোরের ডাক্তারি পরীক্ষা ও আদালতে ২২ ধারার জবানবন্দি গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া বুধবার (৩ আগস্ট) হয়েছে তার বয়স নির্ধারণী পরীক্ষা।  মঙ্গলবার ওই কর্মকর্তা অফিস করলেও বুধবার অফিসে না থেকে গাঁ ঢাকা দিয়েছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০ থেকে ২৫ দিন আগে শহরের শেরীব্রিজ সংলগ্ন বিএডিসি (আলু বীজ) হিমাগারের শ্রমিক সর্দার শরাফত আলীর মাধ্যমে উপপরিচালক খলিলুর রহমানের কোয়ার্টারে কাজের ছেলে হিসেবে কাজ শুরু করে সদর উপজেলার পূর্ব মনকান্দা এলাকার দরিদ্র পরিবারের ওই কিশোর। এরপর উপপরিচালক খলিলুর রহমান নানা প্রলোভনে ওই কিশোরকে পায়ুপথে ধর্ষণ করে এবং বিষয়টি প্রকাশ না করতে ভয়ভীতি দেখায়। এ নিয়ে ধর্ষণের শিকার কিশোর মা-বাবাকে বিষয়টি না জানালেও মন খারাপ করে থাকছিল। ওই অবস্থায় গত ১ আগস্ট সকাল ১০টায় ওই কিশোর কাজে যাওয়ার পর উপপরিচালক খলিল কোয়ার্টারের দ্বিতীয় তলায় তার বসবাসের কক্ষের ভেতর নিয়ে বিভিন্ন প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে কিশোর কান্নাকাটি করতে করতে কোয়ার্টার হতে বের হতে থাকলে অফিসের স্টাফরাসহ অফিসে যাতায়াতকারী লোকজন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ওই ঘটনা ফাঁস করে দেয়। পরে খবর পেয়ে তার বাবা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিস্তারিত জানতে পারেন এবং সেদিনই ছেলেকে নিয়ে থানায় গিয়ে উপপরিচালক খলিলকে একমাত্র আসামি করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করে।

এ ঘটনার ব্যাপারে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. খাইরুল কবীর সুমন জানান, মঙ্গলবার ওই কিশোরের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। তবে তিনি রিপোর্টের ব্যাপারে তথ্য দিতে রাজি হয়নি। 

তিনি বলেন, রিপোর্ট দিতে কয়েকদিন সময় লাগবে। রিপোর্ট তৈরির পর বিস্তারিত বলতে পারবো।

শেরপুর সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নাঈম মোহাম্মদ নাহিদ হাসান বলেন, ভিকটিমের পরিধেয় প্যান্ট-শার্টসহ কিছু আলামত জব্দ করা হয়েছে। সেগুলো পরীক্ষার জন্য ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হচ্ছে এবং ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। আদালত তার জবানবন্দিও গ্রহণ করেছে।

তিনি আরও বলেন, ডাক্তারি রিপোর্ট ও তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

এদিকে ঘটনার বিষয়ে জানতে বিএডিসির উপপরিচালক খলিলুর রহমানের কার্যালয়ে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি এবং মুঠোফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।