ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে নিরাপত্তাহীনতায় বাবা-মা

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:২৩, ২৪ আগস্ট ২০২২  
মেয়ে হত্যার বিচার চেয়ে নিরাপত্তাহীনতায় বাবা-মা

লিখিত বক্তব্যে ছানোয়ার হোসেন

টাঙ্গাইলে রূপা আক্তার নামে গৃহবধূ হত্যার বিচার চাইতে গিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তার বাবা-মা। তাদের অভিযোগ, রূপার স্বামী মিঠুন প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয় নেতাকর্মী ও পুলিশের যোগসাজশে হত্যার ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এ ঘটনায় মামলা করতে গেলে কালিহাতী থানা পুলিশ মামলা নেয়নি। এমনকি ২ লাখ টাকা উৎকোচ না দেওয়ায় তাদের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনও আটকে রয়েছে। 

মেয়ে হত্যার বিচার ও পরিবারের নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিহত রূপার বাবা মো. ছানোয়ার হোসেন। ছানোয়ার হোসেন বাসাইল উপজেলার কাউলজানী মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ছানোয়ার হোসেন জানান, তার মেয়ের সঙ্গে ৮ বছর আগে কালিহাতী উপজেলার তেজপুর গ্রামের মোজাম্মেল তালুকদারের ছেলে মিঠুন তালুকদারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর মিঠুনকে বিদেশ যাওয়ার জন্য ২ লাখ টাকা দেওয়া হয়। মিঠুন বিদেশ থেকে এক বছর পর বাড়ি ফিরে আসেন। এরপর মিঠুন এক পর্যায়ে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। যৌতুকের দাবিতে মিঠুন রূপাকে মাঝে-মধ্যে মারধর করতেন। বিষয়টি কাউকে বললে রূপার মুখে এসিড দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দিতো। এক পর্যায়ে রূপাকে তালাক দিয়ে বাড়ি নিয়ে আসা হয়।

ছানোয়ার হোসেন জানান, তালাকের প্রায় ছয় মাস পর ফুসলিয়ে আবারও রূপাকে বিয়ে করে মিঠুন। দেড় মাস সংসার করার পর রূপাকে যৌতুকের দাবিতে পূনরায় মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে গত ১৭ মার্চ মিঠুনসহ তার পরিবারের লোকজন রূপাকে মারধর করে। তারা রাতের কোনো এক সময় রূপাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার প্রচার চালায়। পর দিন খবর পেয়ে তারা (রূপার বাবা-মা) রূপার স্বামীর বাড়ি গিয়ে রূপার বাম হাতের কব্জির রগ কাটা দেখতে পান। এ ঘটনায় কালিহাতী থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। ময়না তদন্তের প্রতিবেদনের অপেক্ষা করতে বলেন। পরে আদালতে মিঠুনকে প্রধান আসামি করে মামলা করলে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘ময়নাতদন্তের রিপোর্টের বিষয়ে জানতে কালিহাতী থানার এসআই আল আমিনের কাছে গেলে তিনি ২ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় পাঁচ মাস পার হলে আজও পর্যন্ত রিপোর্ট পাইনি। এ অবস্থায় মামলা তুলে নিতে আমাদের বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছেন মিঠুনের পরিবার। বর্তমানে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমার মেয়ে হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত করে আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’ 

দুই লাখ টাকা দাবি করার বিষয়ে কালিহাতী থানার অভিযুক্ত এসআই আল আমিন বলেন, ‘তাদের কাছে কোনো প্রকার টাকা চাওয়া হয়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তাদের দেওয়া হয়েছে।’ 
টাঙ্গাইলের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এসআই ফরিদ মিয়া বলেন, তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে।
 

কাওছার/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ