ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

বৃষ্টি ও নদীর পানিতে বাগেরহাটের বিভিন্ন উপজেলা প্লাবিত 

বাগেরহাট প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪৯, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২  
বৃষ্টি ও নদীর পানিতে বাগেরহাটের বিভিন্ন উপজেলা প্লাবিত 

টানা দুই দিনের বৃষ্টি ও পূর্নিমারে জোয়ারে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে বিভিন্ন উপজেলার অন্তত শতাধিক গ্রাম। সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। এমনকি বাড়িতে পানি প্রবেশ করায় রান্নার কাজও বন্ধ রয়েছে কোনো কোনো এলাকায়। 

অন্যদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ঠ নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল থাকায় জেলেরা নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে। কোনো কোনো ট্রলার রোববার রাতেই লোকালয়ে ফিরে এসেছে। 

সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) বাগেরহাট পৌর শহরের রাহাতের মোড়, সাধনার মোড়, পূর্ব বাসাবাটি, কেবিবাজারেরে পেছনে, পুরাতন বাজার ভূমি অফিসের সামনে, মালোপাড়া, বাগেরহাট মাছ ও কাঁচা বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় ভৈরব নদীর জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া সদর উপজেলার মাঝিডঙ্গা আশ্রয়ণ প্রকল্প, চরগ্রাম, বিষ্ণুপুরসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

কচুয়া উপজেলার ভান্ডারখোলা, নরেন্দ্রপুর, প্রতাপপুর, সাংদিয়া, আফরাসহ বিভিন্ন এলাকাতেও বৃষ্টির পানি জমে জলবদ্ধতার সৃষ্টি করেছে। 

বৃষ্টি ও পানগুচি নদীর জোয়ারের পানিত মোরেলগঞ্জের প্রধান বাজার, উপজেলা পরিষদের অফিস চত্বর, তেলিগাতি, হোগলাপাশা, ফুলহাতাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেক মানুষ। 

এছাড়া রামপালে পশুর নদী এবং শরণখোলায় বলেশ্বর নদী ও বৃষ্টির পানিতে উপজেলার বেশকিছু এলাকাও প্লাবিত হয়েছে। 

বাগেরহাট শহরের মালোপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. শহিদ বলেন, ‘প্রতি পূর্ণিমা ও আমাবশ্যার জোয়ারে সুইস গেট থেকে পানি এসে আমাদের এলাকা প্লাবিত হয়। সুইস গেট নষ্ট থাকায় আমাদের দূর্ভোগ পোহাতে হয়। এছাড়া যেসব সুইস গেট বন্ধ থাকা প্রয়োজন তা খোলা রাখা হয় জোর করে। এর ফলে আমাদের ছাগল, গরু, হাস মুরগি পানিতে ভেসে যায়।’

একই এলাকার হাসি বেগম বলেন, ‘এত বেশি পানি উঠেছে যে আমাদের চুলাও পানিতে তলিয়ে রয়েছে। রোববার থেকে রান্না করতে পারছি না। এভাবে চলতে থাকলে আমরা কিভাবে বাঁচব।’

কচুয়া উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের সাব্বির মোল্লা বলেন, ‘বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে আমাদের এলাকার রাস্তা যেমন ডুবে গেছে তেমনি আমাদের বাড়ি ঘরেও পানি উঠেছে। খুব কষ্ট হচ্ছে আমাদের।’ 

সাগর উত্তাল থাকায় লোকালয়ে ফিরে আসা জেলে নয়ন বলেন, ‘রোববার সকাল থেকেই সাগর উত্তাল ছিল। সাগর এখন আরও বেশি উত্তাল। আমরা রাতেই রওনা দিয়ে বাগেরহাট কেবি বাজার এলাকায় চলে আসি। তবে এ যাত্রায় কারও কোনো ক্ষতি হয়নি।‘

এদিকে গত রোববার দুপুরের জোয়ার থেকে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বনের করমজল, দুবলার চরসহ বিভিন্ন এলাকায় অন্তত দুই-তিন ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বন্য প্রাণির ক্ষতি হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। 

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের করমজল বন্য প্রাণি প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির জানান, এই পানিতে বনের কোনো প্রাণির ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। 

 

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, ‘পূর্ণিমার জোয়ার ও টানা বৃষ্টিতে বেশকিছু এলাকায় পানি উঠেছে। তবে কোনো মানুষ বা প্রাণির ক্ষতি হয়নি। সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা নিজ নিজ এলাকায় খোঁজ খবর রাখছেন। কারও কোনো বিপদ হলে বা খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন হলে তাৎক্ষনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ 

টুটুল/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ