ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

নতুন ব্যবস্থাপনায় ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পিকে হালদারের কুমিরের খামার

মাহমুদুল হাসান মিলন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:০৯, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২   আপডেট: ১৩:১৭, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২
নতুন ব্যবস্থাপনায় ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পিকে হালদারের কুমিরের খামার

‘খাল কেটে কুমির আনা’ মানে বিপদ ডেকে আনা। চিরায়ত এই বাংলা প্রবাদকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে কুমির চাষ করে চমক সৃষ্টি করেছিলেন মোস্তাক আহমেদ। ২০০৪ সালে ময়মনসিংহের ভালুকায় ১৫ একর জমিতে তিনি গড়ে তোলেন দেশের প্রথম বাণিজ্যিক কুমিরের খামার। ৩৬ শতাংশ মালিকানা নিয়ে এই উদ্যোগে সহ-উদ্যোক্তা ছিলেন মেজবাহুল হক। কিন্তু ২০১২ সালে খামারের শেয়ার ছেড়ে দিলে মালিকানা নেন প্রশান্ত কুমার হালদার। পিকে হালদার নামে তিনি পরিচিত। খামার দেখিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ গ্রহণ করেন তিনি।   

২০২০ সালে সরকার পিকে হালদারের লাগাম টানেন। এরপর হুমকিতে পড়ে খামারটি। ফলে গত দুই বছর মুখ থুবড়ে পড়েছিল খামারের কার্যক্রম। তবে আশার কথা, সম্প্রতি নতুন মালিকানায় সংকট কাটিয়ে আবারও পুরোদমে শুরু হয়েছে খামারের কাজ। বাড়তি আয়ের লক্ষ্যে খামারটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলেও জানা গেছে।  

জানা যায়, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে আদালত খামারটি পরিচালনার জন্য পরিচালনা পর্ষদ গঠনের নির্দেশ দেন। চলতি বছরের মার্চে খামার পরিচালনায় ছয় সদস্যের পর্ষদ গঠন করা হয়। এতে পরিচালকের দায়িত্ব পেয়েছেন ড. নাঈম আহম্মেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পান অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী কুমির বিশেষজ্ঞ এনাম হক। এ ছাড়া পরিচালক পদে দায়িত্ব পেয়েছেন রেজাউল সিকদার, ড. মো. রফিকুল আলম, ফখরুদ্দিন আহম্মেদ এবং শেখ মো. আব্দুর রশিদ। 
এনাম হক বলেন, আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সব সমস্যা সমাধানে কাজ করছি। তবে আগামী দুই বছর যদি সরকারের সহযোগিতা পাই তাহলে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না। কারণ কুমিরের এমন কোনো অঙ্গ-প্রতঙ্গ নেই যা বিক্রি হয় না। আমরা সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করছি। শুধু সময়ের ব্যাপার। 

তিনি আরো বলেন, কুমির চাষকে ঘিরে আমাদের টার্গেট হলো ট্যুরিজম চালু করা। আমরা আমাদের আয় দিয়ে ফার্মটি চালাতে চাই। অক্টোবর থেকে ট্যুরিজম চালু করার পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।

খামারের ব্যবস্থাপক ডা. আবু সাইম মোহাম্মদ আরিফ বলেন, এত দিন নিজেরাও বেতন ভাতা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। নতুন পরিচালনা পর্ষদ আসার পর ২৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংকট কেটে গেছে। বর্তমানে ছোট বড় মিলিয়ে দুই হাজার কুমির রয়েছে। এই বছর খামারে উৎপাদিত কুমিরের ডিম থেকে প্রায় দুশ’ বাচ্চা পাওয়া গেছে। 
এই শিল্প বিকাশে কুমিরের চামড়ার পাশাপাশি মাংস ও দাত রপ্তানিতে সরকারের সহযোগিতার দাবি জানান তারা। 

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুল হক বলেন, বিশ্ব বাজারে কুমিরের চামড়া, মাংস, হাড়, দাঁত চড়া দামে বিক্রি হয়। ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, স্পেনসহ বিভিন্ন দেশে এগুলোর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সরকার সহযোগিতা করলে দেশে উদ্যোক্তা বাড়বে। এ ছাড়াও কুমির চাষে নীতিমালা শিথিল করার পাশাপাশি সরকার ঋণ সুবিধা বৃদ্ধি করলে আয়ের একটি অন্যতম উৎস হবে এটি।  

/তারা/ 

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়