ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

খুলনায় সবজির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪৮, ২৯ অক্টোবর ২০২২   আপডেট: ১৩:৪৯, ২৯ অক্টোবর ২০২২
খুলনায় সবজির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা

ফাইল ফটো

খুলনার বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সঙ্গে দাম বেড়েছে শীতকালীন সবজিরও। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সব ধরণের সবজির দর বেড়েছে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা। কমেনি ডিম, চিনি, মাছ, মাংস ও চালের দাম। 

ব্যবসায়ীরা জানান, ঘূর্ণিঝড়ে সবজি ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ কম। এ কারণে দামও বেশি। 

এছাড়া চলতি সপ্তাহ থেকে ব্যবসায়ীরা বাজারে সরকার নির্ধারিত দামে খোলা ও প্যাকেটজাত চিনি বিক্রির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু কারা এখনো নির্ধারিত দামের চেয়ে ২০-৩০ টাকা বেশিতে চিনি বিক্রি করছেন। এদিকে বাজারে মাছ, মাংস, সবজি, চালসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যও অতিরিক্ত দামে বিক্রি হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুলনায় মশুর ডাল ২০ টাকা ও ভোজ্য সয়াবিন লিটার প্রতি ১০ টাকা বাড়তি দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। 
চালের বাজারে আবারও ঊর্ধ্বমুখী হতে দেখা গেছে। পাইকারি পর্যায়ে মাঝারি আকারের চালের দাম কেজিতে ১-২ টাকা বেড়েছে। 

ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে এবং ডিমের ডজনে আরও ৫ টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে সোনালী জাতের মুরগি আগের মতো ৩১০ থেকে ৩২০ টাকায় কেনা যাচ্ছে। আর ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়।

শুক্র ও শনিবার (২৯ অক্টোবর) নগরীর বিভিন্ন বাজারে মানভেদে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, রসুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, আলু ২৮ থেকে ৩০ টাকা, কাঁচামরিচ ৪০ টাকা, শীতকালীন সিম ১০০ টাকা, গাজর ১৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, পটল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, লালশাক, ঘিকাঞ্চন শাক ৩০-৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। 

তবে গত সপ্তাহে মানভেদে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, রসুন ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, আলু ২৮ টাকা, কাঁচামরিচ ৪০ টাকা, শীতকাল সিম ৮০ থেকে ৯০ টাকা, গাজর ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, পটল ৩০ টাকা, লালশাক, ঘিকাঞ্চন ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়। 

নগরীর বড় বাজারে চিনির দাম কেজিতে ২৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকায়। মশুর ডাল (দেশি) কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। এছাড়া ভোজ্য সয়াবিন লিটারে ১০ টাকা বেড়েছে, বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। 

নগরীর ময়লাপোতাস্থ সন্ধ্যা বাজারে ক্রেতা মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পাঁচ-ছয় দিনের ব্যবধানে সবধরণের সবজির দাম কেজিতে বৃদ্ধি পেয়েছে অন্তত তিন টাকা। দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো মাথা ব্যথা নেই।’
 
বাজারের ব্যবসায়ী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, বাজারে যখন সবজির সরবরাহ বাড়তে থাকবে তখন হয়তো দামও কমতে শুরু করবে। কিন্তু এখন চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম।’ 

নগরীর নতুন বাজারে আসা ক্রেতা মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এখন বাজার সবজিতে ভরপুর কিন্তু দাম কমছে না। সবজির দাম বেশি হলেও এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের কোনো পদক্ষেপ নেই বললেই চলে।’ 

আরেক ক্রেতা মো. ওলিউল্লাহ বলেন, ‘সবজিসহ সবধরনের জিনিস ও পণ্যের দাম দিনদিন বেড়েই চলেছে। প্রত্যেকটি দোকানে মূল্য তালিকা টানানো থাকে তাহলে অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছামতো দাম হাকাতে পারেন না। এতে মূল্য সহজে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।’

খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, ‘সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড়ে সবজির তেমন ক্ষতি হয়নি। আর এ জন্য পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কথা না। মূলত কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বৃদ্ধি করছেন।’  

খুলনা জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা শাহরিয়া আকুঞ্জি বলেন, ‘কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী অধিক লাভের আশায় বিভিন্ন পণ্যের দাম বেশি রাখছেন। তবে বাজার যথারীতি মনিটরিং করা হচ্ছে।’ 

নূরুজ্জামান/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়