ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

আয়ের অবলম্বন হারিয়ে কাঁদছেন রশিদ

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৪, ২৪ মার্চ ২০২৩  
আয়ের অবলম্বন হারিয়ে কাঁদছেন রশিদ

অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে সংসার চালান দুর্ঘটনায় পা হারনো আব্দুর রশিদ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে মসজিদের সামনে অটোরিকশা রেখে আসরের নামাজ পড়তে যান তিনি। নামাজ শেষে এসে অটোরিকশা দেখতে না পেয়ে নানা জায়গা খোঁজ করতে শুরু করেন তিনি। কেঁদে কেঁদে আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় চুরি যাওয়া অটোরিকশার খোঁজ করতে দেখা যায় তাকে। রশিদের এমন অসহায়ত্ব দেখে ভারক্রান্ত হয়ে ওঠে আশপাশের মানুষের মনও।

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার মাওনা চৌরাস্তার পুকুর পাড় জামে মসজিদের সামনে এমন হৃদয় বিদারক ঘটনাটি ঘটে।

শারীরিক প্রতিবন্ধী আব্দুর রশিদ (২৪) সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানার পুরান নোয়াকোট গ্রামের শফিক মিয়ার ছেলে। তিন মাস আগে পরিবার নিয়ে গাজীপুরের শ্রীপুর শহরের তাজু নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে ভাড়া ওঠেন রশিদ। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে হার মানিয়ে অটোরিকশা চালিয়ে পরিবারের মুখে খাবর তুলে দিচ্ছিলেন। এখন অটোরিকশা হারিয়ে তিনি মহা বিপদে পড়েছেন। 

আব্দুর রশিদ বলেন, ‘ছোট বেলায় নৌকায় করে নানার বাড়ি যাচ্ছিলাম। সেসময় নৌকার ইঞ্জিনের সাথে লেগে বাম পা হারাই। এরপর থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে সব সময় মানুষের কাছে ছোট হয়ে থাকতে হয়েছে। পরে ছাতকে বাড়ির পাশে একটি চায়ের দোকান দেই। পাথর ভাঙার শ্রমিকরা মূলত কাস্টমার ছিল। এক সময় পাথর ভাঙা বন্ধ হয়ে গেলে দোকানও বন্ধ হয়ে যায়। পরে এলাকা ছেড়ে পরিবার নিয়ে গাজীপুরের শ্রীপুরে এসে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে ৯০ হাজার টাকায় একটি অটোরিকশা কিনি। অটোরিকশা কেনার মাস তিনেকের মধ্যে ব্যাটারি নষ্ট হয়ে গেলে কর্মহীন হয়ে বসে ছিলাম অনেকদিন। পরে স্থানীয়দের পরামর্শে সাপ্তাহিক ১৫০০ টাকা কিস্তিতে একটি এনজিও থেকে ৬০হাজার টাকা ঋণ নিয়ে অটোরিকশার ব্যাটারি কিনে তা সচল করি এবং অটোরিকশা চালাতে শুরু করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি সারাদিন অটেরিকশা চালালেও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি। যখন নামাজের সময় হয় আমি আশপাশের মসজিদে নামাজ আদায় করি। বৃহস্পতিবারও মসজিদের সামনে অটোরিকশা রেখে নামাজে গিয়েছিলাম। নামাজ শেষে বাইরে এসে দেখি অটোরিকশাটি নেই। এ রিকশাটিই ছিল আমার আয়ের প্রধান উৎস।’

বুলবুল হাসান নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘নামাজ এসে যে অটোরিকশা হারাতে হবে এটা মানা খুব কস্টকর। বিত্তবানদের উচিত প্রতিবন্ধী রশিদের পাশে দাঁড়ানো। কারণ অটোরিকশা না থাকায় রশিদের যেমন আয় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তেমনি তার ওপর কিস্তির ভারও এসে পড়বে।’

রফিক/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়