ঈদে সেন্টমার্টিন যেতে পারবেন না পর্যটকরা
কক্সবাজার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

ঈদের টানা ছুটিতে কক্সবাজার পর্যটকে ভরপুর থাকবে বলে আশা করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। তাদের ধারণা প্রতিদিন গড়ে ৭০-৮০ হাজার পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণে আসবেন। আর এ উপলক্ষে হোটেল-মোটেল গুলোতে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ছাড়ও দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ঈদের টানা ছুটিতে সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করতে পারবেন না পর্যটকরা। কারণ সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
এদিকে, প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি কবে নাগাদ মিলবে তাও নিশ্চিত করতে পারেননি কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) মো. আবু সুফিয়ান।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারের এক ডজন বেড়ানোর স্থান
মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কক্সবাজারে আগত পর্যটকদের সার্বিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকল্পে অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় একথা জানান তিনি।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান বলেন, কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবস্থাকে আরো এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন। এক্ষেত্রে আমাদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। ঈদের ছুটিতে পর্যটকরা যাতে কক্সবাজারে নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারেন সে জন্য প্রতিটি পর্যটন স্পটে অতিরিক্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের একাধিক টিম মাঠে থাকবে। কেউ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করার সুযোগ পাবে না। দিনরাত পর্যবেক্ষণে রয়েছে প্রতিটি এলাকা।
সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের ব্যাপারে তিনি বলেন, বৈরী আবহাওয়ার সম্ভাবনা ও জাহাজ চলাচলে অসুবিধাগত নানা কারণে সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে। কবে নাগাদ অনুমতি দেওয়া হবে তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। সুতরাং নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিনে নৌপথে জাহাজ চলাচলের সুযোগ নেই।
সী-ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, প্রতিবছর সাধারণত মার্চের শেষ তারিখ সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখি আমরা। কিন্তু বৈরী আবহাওয়া ও রমজান উপলক্ষে ২৪ মার্চ জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। এবার ঈদের ছুটিতে জাহাজ চলাচলের অনুমতির ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা করলে বৈরী আবহাওয়াতে পর্যটকদের ক্ষতির আশঙ্কার বিবেচনায় তিনি অনুমতি দেননি।
তিনি আরও বলেন, আবহাওয়া স্বাভাবিক কিংবা সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচলের অনুমতির জন্য আবারও আবেদন এবং আলোচনা করা হবে।
কক্সবাজার হোটেল অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ বলেন, সেন্টমার্টিন ছাড়াও কক্সবাজারের আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়ানোর জন্য একাধিক পর্যটন স্পট রয়েছে। যেমন ইনানীর পাটোয়ারটেক, পাথর রাণী বিচ বা পাথুরে বিচ। এখানে ভ্রমণ করলে সেন্টমার্টিনের সাধ মেটানো যাবে। পর্যটকরা শুধু সমুদ্রসৈকত এবং সেন্টমার্টিন বিচে ভ্রমণ করেন। কিন্তু আরো কত যে সুন্দর সুন্দর জায়গা কক্সবাজার রয়েছে তা তাদের অজানা। এসব পর্যটন স্পটগুলো ভ্রমণ করলে পর্যটকরা অনেক আনন্দ পাবেন বলে আশা করছি।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মুহাম্মদ শাহীন বলেন, এই ঈদের টানা ছুটিতে কক্সবাজারে ২ লাখ পর্যটক আসবে বলে ধারণা করছি। যতই পর্যটক আসুক না কেন, তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে ট্যুরিস্ট পুলিশ সবসময় সজাগ রয়েছে। জেলার পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটকরা যাতে নিরাপদে ঘুরে বেড়াতে পারেন সেজন্য ট্যুরিস্ট পুলিশ সহযোগিতার জন্য বদ্ধপরিকর। এছাড়াও সমুদ্রসৈকতে আগত পর্যটকদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিতে ট্যুরিস্ট পুলিশের একাধিক টিম সাদা পোশাকে মাঠে থাকবে।
তারেকুর/ মাসুদ
আরো পড়ুন