ভ্যান হারিয়ে দিশেহারা প্রতিবন্ধী মোহাম্মদ
শাহীন আনোয়ার, মাগুরা || রাইজিংবিডি.কম
৩২ বছর বয়সী মোহাম্মদ শেখ। স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে শারীরিক প্রতিবন্দ্বী এই মানুষটির সংসার। ব্যাটারি চালিত ভ্যানগাড়ি চালিয়েই সংসার চালান তিনি। কিন্তু আয়ের একমাত্র সম্বলটি হারিয়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলালার বালিদিয়া ইউনিয়নের বড়রিয়া পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ শেখ। তিনি মৃত সিদ্দিক শেখের ছেলে।
শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে কথা হলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে মোহাম্মদ শেখ বলেন, বাড়ির কয়েক শতক জমি ছাড়া আর কোনো জমি নেই আমার। স্ত্রী শুকুরন অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। প্রায় তিন বছর আগে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ করে ব্যাটারিচালিত একটি অটোরিকশা কিনি। এই অটোরিকশা চালিয়ে দিনে গড়ে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা উপার্জন হতো। এই টাকায় সংসারের খরচ ও সুদসহ ঋণের টাকা পরিশোধ করছিলাম আমি।
তিনি বলেন, গত বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাড়ির বারান্দায় ভ্যানটি চার্জে দিয়ে ঘুমাতে যাই। সকালে এসে দেখি ভ্যানটি নেই। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও ভ্যানটির সন্ধান পায়নি।
মোহাম্মদ শেখ বলেন, ২০০৭ সালে নারকেল গাছ থেকে পড়ে প্রতিবন্ধী হই। কিন্তু কেনোদিন কারও কাছে হাত পাততে হয়নি। শত কষ্টে নিজের আয় নিজেই করেছি। হুইল চেয়ারে চলাফেরা করলেও ব্যাটারি চালিত অটোভ্যান চালাতাম নিয়মিত। ভ্যানটি চুরি হওয়ায় চরম দুর্দশার মধ্যে পড়েছি। নতুন অটোরিকশা কেনার মতো টাকাও নেই। ঋণের টাকা দেবো কিভাবে? বউ-ছেলে মেয়েরে খাওয়াবো কি?’
মোহাম্মদ শেখের মা আছিরন বলেন, ভ্যানটাই ছিল আমার ছেলের আয়ের সম্বল। ভ্যান নেই আয় নেই। সংসার চলছে না। খেয়ে না খেয়ে দিন যাচ্ছে ওদের। ভ্যান কেনার সামর্থ আমার ছেলের নেই।
বালিদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. বাবলুর রহমান বলেন, অটোরিকশা চালিয়েই মোহাম্মদ শেখের সংসার চলত। উপার্জনের একমাত্র অবলম্বনটুকু চুরি হওয়ায় তিনি অর্থকষ্টে পড়েছেন।
মাসুদ
আরো পড়ুন