ঢাকা     শনিবার   ০৪ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২১ ১৪৩১

৭ মে আজমত যাবেন ইসিতে, জাহাঙ্গীর হাইকোর্টে 

রেজাউল করিম, গাজীপুর  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৩৪, ৬ মে ২০২৩   আপডেট: ১১:৪৭, ৬ মে ২০২৩
৭ মে আজমত যাবেন ইসিতে, জাহাঙ্গীর হাইকোর্টে 

তৃতীয় বারের মতো আগামী ২৫ মে অনুষ্ঠিত হবে দেশের সর্ববৃহৎ গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের (গাসিক) নির্বাচন। নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন ৯ প্রার্থী। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আজমত উল্লা খান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম মূল আলোচনায় রয়েছেন।

তবে ঋণখেলাপীর দায়ে জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। মনোনয়ন বাতিল হওয়ার পর হাইকোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জাহাঙ্গীর। অপর দিকে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে আজমত উল্লা খানকে স্বশরীরে উপস্থিত থেকে ব্যাখ্যা দিতে বলেছে ইসি।

রোববার (৭ মে) নির্বাচন কমিশনে ব্যাখ্যা দিতে যাবেন আজমত উল্লা খান। সেখানে তিনি তার বক্তব্য তুলে ধরবেন। একই দিনে প্রার্থীতা ফেরত পেতে নির্বাচন কমিশনের আদেশের বিপরীতে উচ্চ আদালতে (হাইকোর্ট) যাবেন জাহাঙ্গীর আলম। ফলে গাজীপুর নগরবাসী এবং ভোটাররা রোববার কী হয় সেটি দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন। নগরবাসী বলছেন, ওই দিনের সিদ্ধান্তের পরেই পাল্টে যাবে নির্বাচনের চিত্র। 

আজমত উল্লা খান যদি ইসির কাছে সঠিক ব্যাখ্যা দিতে না পারেন তবে পরিস্থিতি অন্যরকম হবে। অপরদিকে জাহাঙ্গীর আলম হাইকোর্ট থেকে যে আদেশই পান সে ক্ষেত্রেও পাল্টে যাবে নির্বাচনী পরিবেশ। একাধিক ভোটারের সঙ্গে কথা বললে তারা এ মন্তব্য করেন।  

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী আজমত উল্লা খানের প্রার্থিতা কেন বাতিল করা হবে না এ বিষয়ে তার ব্যাখ্যা চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির সভায় আজমত উল্লাকে ৭ মে উপস্থিত হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। আচরণবিধি সংক্রান্ত এই চিঠি এবং ব্যাখ্যার বিষয়ে আজমত উল্লা খান বলেন, নির্বাচন কমিশনের দেয়া চিঠি হাতে পেয়েছি। এই চিঠির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের গ্রহণযোগ্যতা প্রমাণিত হয়েছে। যেহেতু আমাকে ডেকেছে আমি তাদের জবাব দেব। আমি বিশ্বাস করি তাদের (ইসি) প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিতে সক্ষম হবো- আমি কোনো আচরণবিধি লঙ্ঘন করিনি। 

অপরদিকে গত ৩০ এপ্রিল মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের দিনে বাংলাদেশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণের কারণে জাহাঙ্গীর আলমের মনোনয়ন বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম। ওই সিদ্ধান্তের পর জাহাঙ্গীর আলম বিভাগীয় কমিশনারের কাছে মনোনয়নপত্র বৈধকরণের আপিল করেন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর আলমের ঋণ খেলাপীর কারণে মনোনয়ন বাতিল করে রিটার্নিং কর্মকর্তার দেয়া আদেশ বহাল রাখেন। এ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার সব কাগজপত্র বৈধ থাকার পরও আপিল খারিজ করা হয়েছে। এ জন্য আমি রোববার উচ্চ আদালতে যাবো। সেখানে আশাকরি ন্যায় বিচার পাবো। 

এদিকে শুক্রবার গাজীপুর ভোগড়া বাইপাস কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জুমার নামাজে গিয়ে মুসুল্লিদের উদ্দেশ্যে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার সমস্ত কাগজপত্র ঠিক ছিল। তারপরও বিভাগীয় কমিশনার আমার আপিল খারিজ করে দিয়েছেন। আমি এখন উচ্চ আদালত হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত যাবো। আমারটা বাতিল হলেও আমার মনোনয়ন বৈধ আছে। আমি এই শহর রক্ষার দায়িত্ব নিয়েছি। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গত ১৮ মাস ধরে আমাকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে। আমি শেষ পর্যন্ত দেখতে চাই। সকলে আমার জন্য দোয়া করবেন। 

এখন পর্যন্ত যাচাই-বাছাই শেষে গাসিক নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে ৯ জন মাঠে রয়েছেন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের আজমত উল্লা খান, জাতীয় পার্টির এম এম নিয়াজ উদ্দিন, গণফ্রন্টের আতিকুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান, স্বতন্ত্র আবদুল্লাহ আল মামুন মণ্ডল, হারুন অর রশিদ, সরকার শাহানুর ইসলাম, জাকের পার্টির রাজু আহমেদ এবং জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন।

ফরিদুল ইসলাম বলেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। আমরা নির্বাচনের আচরণ বিধি মানতে প্রার্থীদের বিভিন্নভাবে নির্দেশনা দিচ্ছি। ইতোমধ্যে অনেককে সতর্ক করা হয়েছে, চিঠি দেওয়া হয়েছে। এরপরেও তারা বিধিভঙ্গ করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

টিপু/তারা

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়