ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

তালাবদ্ধ ঘরে পেট্রল নিক্ষেপ, ঘুমন্ত স্বামী-স্ত্রী ও শিশু অগ্নিদগ্ধ

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:২২, ২৮ মে ২০২৩   আপডেট: ১৯:৩১, ২৮ মে ২০২৩
তালাবদ্ধ ঘরে পেট্রল নিক্ষেপ, ঘুমন্ত স্বামী-স্ত্রী ও শিশু অগ্নিদগ্ধ

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় রাতের আঁধারে ঘর তালাবদ্ধ করে পেট্রল নিক্ষেপ করে আগুন ধরিয়ে দেওয়ায় গৃহকর্তা, তার স্ত্রী ও তাদের শিশু কন্যা অগ্নিদগ্ধ হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চন্দনপুর গ্রামে। 

নির্যাতনের কারণে বোন সুফিয়া খাতুনকে স্বামীর বাড়িতে না পাঠানোয় শ্যালক ও ভগ্নিপতির মধ্যে বিরোধের জেরে পেট্রল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।

ভগ্নিপতি সবুজ হোসেন যশোরের শার্শা উপজেলার নারায়ণপুর পোড়াবাড়ি এলাকার আব্দুল বারীর ছেলে। তিনি পেশায় জুট মিলের শ্রমিক। 

এ ঘটনায় সবুজ হোসেন রাতে চন্দনপুর গ্রামের আশ্রয় দেওয়া আব্দুল মান্নান বিহারীর ছেলে সোহাগ হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে কলারোয়া থানা পুলিশ। 

চন্দনপুর ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, রোববার ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে ওই গ্রামের আহাদ আলীর ছেলে কাদের হোসেনের ঘরের দরজা বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে জানালা দিয়ে কে বা কারা পেট্রল ছুড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘুমন্ত অবস্থায় আগুনে দগ্ধ হলেও দরজা বাইরে থেকে তালাবদ্ধ থাকায় তারা ঘর থেকে বের হতে পারেননি। সেই সময় আগুনে পুড়ে দগ্ধ হন কাদের হোসেন, তার স্ত্রী শারমিন ও কন্যা ফাতেমা। তাদের চিৎকারে আশপাশের ঘুমন্ত প্রতিবেশীরা উঠে এসে জানালার রড ও তালা ভেঙে তাদের উদ্ধার করে। পরে তাদের সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আশংকাজনক অবস্থায় কাদের হোসেনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান তিনি। 

তিনি আরও জানান, ‘বোনকে স্বামীর বাড়িতে পাঠানোকে কেন্দ্র করে আহত কাদেরের সঙ্গে তার বোনের স্বামী সবুজ হোসেনের কয়েক দিন ধরে ঝামেলা চলছিল। এমনকি মোবাইল ফোনে কাদেরকে হুমকি-ধামকিও দিতেন সবুজ। বিষয়টি কাদের অতিসম্প্রতি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকেও জানিয়েছিলেন। কয়েক দিনের মধ্যে শালিস-বৈঠকের কথা ছিল।’ 

ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ভুক্তভোগী পরিবার ও প্রতিবেশীরা ধারণা করছেন ভগ্নিপতি সবুজ হোসেন দরজায় তালা মেরে জানালা দিয়ে পেট্রল ছুড়ে আগুন ধরিয়ে দিতে পারে। 

কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সংবাদ পেয়ে সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আহত কাদেরের বোন সুফিয়া খাতুন (সবুজের স্ত্রী) বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এ ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে সবুজের সহযোগী সোহাগকে আটক করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত সবুজ হোসেনকে আটকের চেষ্টা চলছে। 

সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আল আহমেদ আল মাসুদ জানান, কাদেরের অবস্থা অবনতি হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। অন্য দুজনের অবস্থাও শঙ্কামুক্ত নয়।
 

শাহীন/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়