ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

চট্টগ্রামে আয়োজিত হচ্ছে হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:০১, ১০ জুন ২০২৩  
চট্টগ্রামে আয়োজিত হচ্ছে হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতা

চট্টগ্রামে প্রথমবারের আয়োজন করা হচ্ছে হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতা। দুই বিভাগে আয়োজিত প্রতিযোগিতায় ছয়জনকে দেওয়া হবে বিশেষ পুরস্কার। একই সঙ্গে ছয়জন বিজয়ীর বাবা-মাকে নেওয়া হবে ওমরাহ হজে। 

শনিবার (১০ জুন) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানান প্রতিযোগিতা আয়োজনকারী সংস্থা জলিল-জাহান ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আলহাজ মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন চৌধুরী। 

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পূর্ণাঙ্গ ৩০ পারা ও ১৫ পারার দুটি পৃথক বিভাগে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। ৩০ পারা বিভাগে প্রথম পুরষ্কার ১ লাখ ১ টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ৫০ হাজার ১ টাকা, তৃতীয় পুরস্কার থাকছে ২৫ হাজার ১ টাকা। এছাড়া চতুর্থ থেকে ১০ম স্থান অর্জনকারীদের প্রত্যেকের জন্য থাকবে ১০ হাজার ১ টাকা পুরস্কার।

একইভাবে ১৫ পারা বিভাগে প্রথম পুরস্কার ৫০ হাজার ১ টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার ২৫ হাজার ১ টাকা এবং তৃতীয় পুরস্কার ১৫ হাজার ১ টাকা। এছাড়া চতুর্থ থেকে ১০ম স্থান অর্জনকারীদের প্রত্যেকের জন্য থাকবে ৫ হাজার ১ টাকা পুরস্কার। এছাড়াও উভয় বিভাগের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারী অর্থাৎ মোট ৬ জনের বাবা-মাদের জন্য থাকবে পবিত্র (ওমরাহ) হজ পালনের সুবর্ণ সুযোগ। তাদের পাসপোর্ট থেকে শুরু করে যাবতীয় খরচ জলিল-জাহান ফাউন্ডেশন বহন করবে এবং এই ৬ জন হাজী সাহেবানের খেদমতের জন্য ফাউন্ডেশনের একজন কর্মকর্তা উনাদের সফরসঙ্গী হবেন। 

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত ৮ মে থেকে প্রতিযোগিতার রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়। এটি আগামী ২০ জুন পর্যন্ত চলবে। ৩০ পারা বিভাগে অনুর্ধ্ব ১৬ বছর ও ১৫ পারা বিভাগে অনুর্ধ্ব ১৪ বছরের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন। প্রতিযোগিতাটি প্রাথমিক পর্যায়ে সাতকানিয়ার কেরানীহাটস্থ সী-ওয়ার্ল্ড রিসোর্টে ১৭, ১৮, ১৯ ও ২০ জুলাই চার দিনব্যাপী মোট চারটি রাউন্ডে অনুষ্ঠিত হবে। প্রাথমিক পর্যায়ের প্রতিযোগীদের মধ্যে ৩০ পারা বিভাগ থেকে ১৬ জন ও ১৫ পারা বিভাগ থেকে ১৬ জন অর্থাৎ মোট ৩২ জন প্রতিযোগী চুড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে তাদের বাবা-মাকে সঙ্গে নিয়ে অর্থাৎ ৩২+৬৪ সর্বমোট ৯৬ জন সম্পূর্ণ ফাউন্ডেশনের খরচে ঢাকায় যাবেন ও চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা শেষ হওয়া পর্যন্ত ফাউন্ডেশনের খরচে ঢাকায় অবস্থান করবেন। 

ঢাকায় অবস্থানকালীন এই ৩২ জন প্রতিযোগী তাদের বাবা-মায়ের সঙ্গে বিভিন্ন দর্শনীয় ও ঐতিহাসিক স্থান যেমন পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, চিড়িয়াখানা, বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার বা তারামন্ডল, জাতীয় শহিদ মিনার, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, জাতীয় সংসদ ভবন, জাতীয় জাদুঘর, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর (ধানমন্ডি ৩২), আহসান মঞ্জিল, লাগবাগ কেল্লা ইত্যাদি পরিদর্শন করবেন। দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন ও ঢাকায় অবস্থানকালীন হাফেজ সালেহ আহমাদ তাকরিম আমাদের ৩২ জন প্রতিযোগীর সঙ্গে সময় কাটাবেন। তাকরিমের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ তাঁর অভিভাবক ও শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এই ৩২ জন প্রতিযোগীকে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে পাঞ্জাবি, পায়জামা, টুপি, ঘড়ি, জুতা, আতর, জায়নামায, তাসবিহ ও মেসওয়াক উপহার হিসেবে দেওয়া হবে। প্রতিযোগীদের প্রত্যেকের বাবা-মায়ের জন্য পাঞ্জাবি-পায়জামা ও শাড়ির ব্যবস্থা করা হবে। চূড়ান্ত প্রতিযোগিতাটি দেশের স্বনামধন্য এক বা একাধিক জাতীয় টিভি চ্যানেলে সম্প্রচার করা হবে। 

চট্টগ্রামের প্রাথমিক পর্যায়ে অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীদেরকে যাতায়াত ভাড়া, প্রতিদিন দুপুরের খাবার, বিকেলের নাস্তা, বই, সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে। এছাড়াও সব প্রতিযোগীর সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের অনুরূপভাবে খাবার ও যাতায়াত ভাড়া প্রদান করা হবে।

জলিল-জাহান ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের ক্ষুদে হাফেজরা আন্তর্জাতিক মন্ডলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হাজারো প্রতিযোগীদেরকে পেছনে ফেলে শীর্ষস্থান অর্জনের মাধ্যমে দেশের জন্য সুনাম, খ্যাতি ও সম্মান বয়ে আনছেন। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি হাফেজ সালেহ আহমাদ তাকরিম দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় বিশ্বের ৬৫টি দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম স্থান অর্জন করেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় আমাদের দেশের ক্ষুদে হাফেজরা বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে বিজয়ী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে ও দেশপ্রেমের অনন্য দৃষ্টান্ত রেখে যাচ্ছে। এর অন্যতম কারণ দেশে জাতীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতাসমূহ। কারণ জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতাগুলোতে শীর্ষস্থান অর্জনকারীরাই পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাগুলোতে শীর্ষস্থান অর্জন করছেন। এসব প্রতিযোগিতা ক্ষুদে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের পবিত্র কুরআন হিফজ ও তাজবীদের প্রতি অধিক যত্নবান হতে অনুপ্রাণিত করে। এই ধরনের প্রতিযোগিতাগুলোকে কেন্দ্র করেই প্রতি বছর আমাদের দেশে তৈরি হচ্ছে বিশ্বমানের হাফেজে কুরআন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ, জলিল-জাহান ফাউন্ডেশনের সদস্য মুজিবুল হক চৌধুরী, গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, বাহাউদ্দীন জুয়েল, সাজ্জাদ খালেদ সুমন, সাইফুদ্দিন চৌধুরী, মোঃ আলী,  কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য বোখারী আযম, সাংস্কৃতিক সংগঠক খুরশীদ উল আলম খোকন, আব্দুল মালেক খাঁ প্রমুখ।

রেজাউল/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়