ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৮ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

মেহেরপুরে নার্গিস হত্যা মামলায় ২ জনের মৃত্যুদণ্ড

মেহেরপুর সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:০৮, ১৩ আগস্ট ২০২৩  
মেহেরপুরে নার্গিস হত্যা মামলায় ২ জনের মৃত্যুদণ্ড

মেহেরপুর গাংনী উপজেলার সাহেবনগর গ্রামের বাসিন্দা নার্গিস বেগম হত্যা মামলায় মো. বাশারুল ইসলাম ও ফরজ আলী নামের দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া অন্যধারায় আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রোববার (১৩ আগস্ট) দুপুরে মেহেরপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ রায় ঘোষণা করেন। 

আরো পড়ুন:

সাজাপ্রাপ্ত বাশারুল ইসলাম সাহেবনগর গ্রামের ফোরকান আলীর ছেলে। ফরজ আলী একই গ্রামের জামিল হোসেনের ছেলে। তারা বর্তমানে পালাতক।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ২০১৮ সালের ৫ আগস্ট নার্গিস বেগমকে তার সৎ ছেলে ইয়াকুব আলী গাংনী উপজেলার বামুন্দি আলফালাহ্ ক্লিনিকের সামনে থেকে অপহরণ করে। নার্গিস বেগমের বাড়ি ফিরতে দেরি হওয়ায় তার মেয়ে তাসলিমা খাতুন মাকে খুঁজতে বের হন। কোথাও সন্ধান না পেয়ে তাসলিমা খাতুন গাংনী থানায় একটি জিডি করেন। পরে একই বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর নাম না জানা ব্যক্তিদের আসামি করে তসলিমা খাতুন বাদী হয়ে দণ্ডবিধির ৩৬৪ ও ৩৪ ধারায় গাংনী থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। ২০১৯ সালের ১২ জানুয়ারি গাংনী থানার পুলিশ বাশারুল নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী দুইদিন পর পুলিশ ইয়াকুব আলী এবং ৪ দিন পর ফরজ আলীকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত তিনজন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। এসময় তারা নার্গিস বেগমকে ধর্ষণ শেষে খুন করা হয়েছে বলে আদালতের কাছে স্বীকারোক্তি দেন।

২০১৯ সালের ২৪ জানুয়ারি বাশারুলের ব্যবহৃত টয়লেটের সেফটি ট্যাংকের ভেতর থেকে নার্গিস বেগমের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ইয়াকুবসহ ওই ঘটনার সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ৩ জনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩৬৪, ৩০২, ২০১, ৩৪ ও ৩৭৯ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নম্বর ২৪/১৮। পরে গাংনী থানার এসআই বিশ্বজিৎ কুমার প্রাথমিক তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ৩০ জুন আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

পরে আসামিদের বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ৯ (৩) ধারায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আরেকটি মামলা করা হয়।
হত্যার মামলায় মোট ২৮ জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য দেন আদালতে। মামলা চলাকালীন সময় ইয়াকুব আলী অসুস্থ হয়ে মারা যান। মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি বাশারুল ইসলাম ও ফরজ আলীর বিরুদ্ধে আনিত ৩০২ ধারার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত তাদের মৃত্যুদণ্ড এবং প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা করে অর্থ দন্ডে দন্ডিত করেন।

একই মামলায় দন্ডবিধির ৩৬৪ ধারায় তাদের ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। মামলা ৩৭৯ ধারায় প্রত্যেককে দুই বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড। দন্ডবিধির ২০১ ধারায় ৩ বছর করে কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। অনাদাযে আরো ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন বিচারক। আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের আটকের দিন থেকে সাজা কার্যকর শুরু হবে। 

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট কাজী শহীদুল হক এবং আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান ও অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান কৌশলী ছিলেন।

মহাসিন/ মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়