ডোমারে গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার, হত্যার দাবি স্বজনদের
নীলফামার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
এই বাড়ি থেকে পল্লবীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়
নীলফামারীর ডোমার উপজেলায় পল্লবী রায় (২৩) নামে গৃহবধুর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শ্বশুরবাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে মরদেহ ঝুলিয়ে রেখেছে বলে দাবি করছেন নিহতের স্বজনরা। আর স্বামীর স্বজনরা বলছে আত্মহত্যা।
বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের নিমোজখানা বাবুপাড়া এলাকার পোড়া মানিকের বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত পল্লবী রানী ওই গ্রামের টোল কালীগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিশ্বদেব রায়ের স্ত্রী। পল্লবী নীলফামারী কলেজে অর্নাস শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
পল্লবী রানীর প্রায় ৫ বছর বয়সী আগের স্বামীর মেয়ে রয়েছে। পল্লবীর মৃত্যুর পর থেকে তার স্বামীকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না।
নিহতের বাবা গৌরাঙ্গ রায় বলেন, ‘আমার মেয়ের সঙ্গে গত ৫ মাস আগে বিয়ে হয় শিক্ষক বিশ্বদেবের। এর আগে বিশ্বদেবের কাছে আমার মেয়ে প্রাইভেট পড়ত। সেখান থেকে তাদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানার পর আমি আমার মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেই। বিশ্বদেবও অন্য জায়গায় বিয়ে করে। আমার মেয়ের আগের সংসারে এক মে সন্তান রয়েছে। বিশ্বদেব আমার মেয়ের স্বামীর বাড়িতে গিয়ে তাদের মধ্যে ডিভোর্স ঘটায়। ডিভোর্সের পর থেকে আমার মেয়ে তার মেয়েকে নিয়ে আমার বাড়িতে থাকে। এখানে থাকার মধ্যে আমার মেয়েকে চার মাস আগে পালিয়ে নিয়ে বিয়ে করে বিশ্বদেব। বিয়ের পর থেকে আমার মেয়ে তার স্বামীর বাড়িতে রয়েছে। সেখানে বিশ্বদেবের আগের বউও থাকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বুধবার সকালে আমার ভাগিনা ফোন দিয়ে জানায়, চেয়ারম্যান রিমুন ফোন দিয়ে বলেছে— পল্লবী ফাঁস দিয়েছে। ঘটনা শোনার পর এখানে এসে দেখি আমার মেয়ে ছাপরা ঘরের ভিতর গলায় ওড়না দিয়ে মাটিতে পা লাগানো অবস্থায় ঝুলে রয়েছে। কীভাবে এ ঘটনা ঘটেছে, জানতে চাইলে বিশ্বদেবের পরিবার টালবাহানা করতে থাকে। আমি এখানে আসার পর খেকে বিশ্বদেবের খোঁজ পাইনি। তিনি পালিয়ে গেছেন।’
গৌরাঙ্গ রায় দাবি বলেন, ‘আমার মেয়েকে মেরে ঘরের মধ্যে তারা ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা প্রচার করছে।’
নিহত পল্লবীর সতীন জুই রায় বলেন, ‘বিশ্বদেব ঘরে গিয়ে দেখে পল্লবী গলায় ওড়না পেচিয়ে ঝুলে রয়েছে। তিনি চিৎকার দিলে আমরা গিয়ে দেখতে পাই, পল্লবী আত্মহত্যা করেছে।’ কেন আত্মহত্যা করেছে, সেই বিষয়ে তারা কিছু বলতে পারেননি।
পল্লবীর মামাত ভাই বিকাশ বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে পল্লবীকে তার স্বামী বিভিন্ন সময় মারধর করতেন। আমরা এ হত্যার বিচার চাই।’
এ বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তা আলী মো. আব্দুল্লাহ বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলার মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
সিথুন/বকুল