ঢাকা     সোমবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৭ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

তালতলী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ 

বরগুনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৫৩, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩  
তালতলী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ 

ভারপ্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম

বরগুনার তালতলীর ভারপ্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অসদাচরণের অভিযোগ করেছেন বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা।

মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) তালতলী উপজেলার ৪৮ জন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে উপজেলার প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা কার্যক্রম হুমিকর মুখে পড়বে‌ বলেও দাবি করেন তারা। 

আরো পড়ুন:

বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা অভিযোগ করেন, ২০১৯ সালে মনিরুল ইসলাম তালতলীতে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার হিসেবে যোগ দেন। চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি থেকে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব পেয়েই তিনি নানাবিধ অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। 

প্রধান শিক্ষকেরা লিখিত অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, মনিরুল ইসলাম বিদ্যালয় পরিদর্শনের নামে ঘুষ নেন, শিক্ষকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন, সরকারের সকল প্রকার বরাদ্দ হতে অর্থ নেন, বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাত করেছেন, শিক্ষকদের যে কোনো বকেয়া বিলের সিংহভাগ তাকে দিতে হয় ও নগদ অর্থের বিনিময়ে ডেপুটেশন আদেশে শিক্ষকদের বদলীর ব্যবস্থা করেন।

তাতিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, যেকোনো সরকারি বরাদ্দ থেকে শিক্ষা অফিসার মনিরুল ইসলামকে ২০ পার্সেন্ট ঘুষ দিতে হয়। এই ঘুষের টাকা না দিলে তিনি বিল পাস করেন না। তালতলী শিক্ষা অফিস এখন দুর্নীতির আখড়া।

ছোট অংকুজান পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) লাইলী বেগম বলেন, ‘শিক্ষা অফিসে যে কোনো কাজে গেলে ঘুষ দিতে হয়। ভারপ্রাপ্ত উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তা টাকা ছাড়া কিছুই বোঝেন না। আমরা প্রতিদিন হয়রানির শিকার হচ্ছি। বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন না করে অর্থ লুট করেছেন তিনি।’  

আগা ঠাকুরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান বলেন, ‘ঘুষ ছাড়া কোনো সেবা দেন না উপজেলা শিক্ষা অফিসার মনিরুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ৪৮ জন প্রধান শিক্ষক মিলে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছি। এই কর্মকর্তার অত্যাচারে সবাই অতিষ্ঠ।’ দ্রুত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন তিনি।

ভারপ্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা অফিসার মনিরুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘একটি মহল আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এমন অভিযোগ দিয়েছেন। আমি ঠিকমত কাজ করছি। দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে স্লিপের টাকা সকল প্রধান শিক্ষকদের ব্যাংক হিসাবে দেওয়া হয়েছে। এসব অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট। জেলা স্যার আমাকে ফোন করেছিলেন, আমি বলেছি— আমার বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ মিথ্যা।’ 

বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবদুর রাজ্জাক রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘৪৮ জন শিক্ষকের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে এ ঘটনার তদন্ত করা হবে। তদন্তে সত্যতা মিললে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
 

ইমরান/বকুল

সম্পর্কিত বিষয়:

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়