মাগুরায় টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন
মাগুরা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন। মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) রাত থেকে বুধবার (৪ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত টানা বৃষ্টি হচ্ছে মাগুরার সর্বত্র। বৃষ্টির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
জানা গেছে, টানা বৃষ্টিতে মাগুরার জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। মধুমতি নবগঙ্গাসহ জেলার সব নদীর পানি বৃদ্ধি ও নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে, দিনভর বৃষ্টির কারণে শহরের রাস্তায় যানবাহন ও মানুষের চলাচল কমে গেছে। লোকজন বৃষ্টির জন্য ভোগান্তিতে পড়েছেন। শ্রমজীবী লোকজন কাজ হারিয়ে ঘরে বসে আছেন।
মহম্মদপুর উপজেলার রায়পুর গ্রামের ভ্যানচালক দিলু মিয়া (৩৫) বলেন, ঈদের আগে ভালো একটা ইনকাম হয়। বৃষ্টিতে লোকজন নেই, আয় নেই। তারপরও পেটের দায়ে প্রত্যেকদিন ভ্যান চালাচ্ছি।
মঙ্গলবার রাত নয়টা থেকেই শুরু হয় বৃষ্টি। কখনো হালকা, কখনো মুষলধারে চলতে থাকে। টানা বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন শ্রমজীবী মানুষ।
মাগুরা সদর উপজেলার বারাশিয়া বাজারে কথা হয় ব্যবসায়ী আকিদুল মিয়া ও রুবেল হোসেনের সঙ্গে। তারা বলেন, ভোরে বাড়ি থেকে বের হয়ে বাজারের একটি ঘরে আটকে আছেন। বৃষ্টির কারণে আজ আর কাজে যাওয়া হবে না। দিন হাজিরা হিসেবে তারা ৪০০ টাকা করে পান বলে জানান। তারা বলেন, ঈদের আগে এভাবে বসে থাকা মানেই ক্ষতি।
রিকশাচালক আজিম হোসেন মিয়া বলেন, মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ার কারণে লোকজন ঘরের বাইরে আসে না, তাই বসে থাকা ছাড়া কোনো কাজ নেই।
বৃষ্টির কারণে উপজেলার অনেক এলাকায় পত্রিকা বিলি করতে পারেননি হকাররা। পত্রিকার তিনজন পাঠক বলেন, সকালে পত্রিকা না পড়লে ভালো লাগে না। হকার শাহীন মিয়া বলেন, সকালে পত্রিকা নিয়ে বের হয়েও বৃষ্টির কারণে বিলি করতে পারিনি।
স্থানীয় একটি কলেজের শিক্ষার্থী রহিমা খাতুন বলেন, কেনাকাটা করব বলে অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু কেনাকাটা করতে বের হয়েই বৃষ্টির কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হলো। একই ধরনের কথা বলেন আরও পাঁচজন। বৃষ্টিতে বিক্রি কমে যাওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করে সদর বাজারের তিনজন ব্যবসায়ী বলেন, ভালো বিক্রির সম্ভাবনা ছিল, অথচ আজ বৃষ্টিতে সবকিছু ভেসে গেল। বৃষ্টি দীর্ঘস্থায়ী হলে বিক্রি আরও কমে যেতে পারে বলে তারা জানান।
তবে কৃষকেরা বলছেন ভিন্ন কথা। আশ্বিনের বৃষ্টি তাদের জন্য পয়মন্ত। বিশেষ করে শীতকালীন সবজি ও রোপা আমন ধানের জন্য বৃষ্টি খুবই প্রয়োজন বলে জানান পাঁচজন কৃষক।
মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুফি রফিকুজ্জামান বলেন, জেলার কোনো উপজেলায় আমন ধান তলিয়ে যাওয়ার খবর নেই। বর্ষার স্বাভাবিক বৃষ্টি কৃষকের জন্য অত্যন্ত উপকার হবে।
/শাহীন/এসবি/