ঢাকা     শনিবার   ০৪ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২১ ১৪৩১

লাপাত্তা মুক্তাগাছা উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা, তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৮:০৪, ২৩ অক্টোবর ২০২৩   আপডেট: ১৮:০৫, ২৩ অক্টোবর ২০২৩
লাপাত্তা মুক্তাগাছা উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা, তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাকিল আহমেদ গুদামের চাবিসহ গত ১৩ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ১০ অক্টোবর তার বদলির আদেশ হয়। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, গুদামে মজুদ ঘাটতি রয়েছে। এর আগেও দায়িত্ব পালনকালে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিয়মিত অফিস না করাসহ অনেক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। 

২০২১ সালের ৯ মার্চ মুক্তাগাছা উপজেলার খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন শাকিল আহমেদ। যোগদানের পর থেকে নিয়মিত অফিস না করা, গুদামের চাল বিক্রি, পঁচা চাল মজুদ ও বরাদ্দ সংগ্রহের নামে অর্থ নেওয়ার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। গত ১০ অক্টোবর তার বদলির আদেশ হয়। তার স্থলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় সাইফুল ইসলামকে। ১১ অক্টোবর সাইফুল ইসলাম মুক্তাগাছা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে যোগদান করলেও এখন পর্যন্ত দায়িত্ব বুঝে নিতে পারেনি। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা শাকিল আহমেদের সঙ্গে সরাসরি কিংবা মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। 

কাগজে-পত্রে গুদামটিতে ৩ হাজার ৩৭৯ মেট্রিক টন চাল মজুদ রয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ধারণা, ৩০০ থেকে ৪০০ মেট্রিক টন চাল মজুদ ঘাটতি রয়েছে। যার কারণে শাকিল আহমেদ গা ঢাকা দিয়েছেন। 

সোমবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে মুক্তাগাছা উপজেলা খাদ্য গুদামে গিয়ে কথা হয় পাঁচ সদস্য তদন্ত কমিটির একজন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যলয়ে কর্মরত উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (কারিগরি) নুসরাত বিনতে আনিছের সঙ্গে। তিনি বলেন, সার্বিক বিষয় নিয়ে আমরা তদন্ত করছি। খাদ্য ঘাটতি রয়েছে কি না তা জানতে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতে গুদামের তালা ভাঙা হবে। সদ্য বিদায়ী খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা শাকিলের সঙ্গে আমরা যোগাযোগের চেষ্টা করছি। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে। 

নতুন যোগদানকৃত ভারপ্রাপ্ত গুদাম কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি ১১ অক্টোবর যোগদান করেছি। কিন্তু এখনো দায়িত্ব বুঝে নিতে পারেনি। এর মধ্যে গুদামের চাবি নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন সাবেক গুদাম কর্মকর্তা। কর্তৃপক্ষ সঠিকভাবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিলেই গ্রহণ করব। 

সদ্য বিদায়ী খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা শাকিল আহমেদ মুঠোফোনে বলেন, আমি গা ঢাকা দেইনি। তবে চাবি আমার কাছে রয়েছে। তা বুঝিয়ে দেওয়া হবে। 

মজুদ ঘাটতির বিষয়ে তিনি আরও বলেন, এবিষয়ে সাক্ষাতে আপনাদের সঙ্গে কথা বলব। পরে তিনি সংযোগটি কেটে দেন। 

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবদুল কাদের বলেন, বদলির সাত কার্যদিবসের মধ্যে শাকিল আহমেদ দায়িত্ব বুঝে না দেওয়ায় মনে হচ্ছে মজুদ ঘাটতি রয়েছে। তাই আমরা গত রোববার পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। কমিটি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। আমরা দেখব গুদামে মজুদ চালের মান, মজুদ এবং অন্যান্য সার্বিক বিষয়গুলো। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে ময়মনসিংহ আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবু নাঈম মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, মুক্তাগাছা খাদ্য গুদামের বিষয়ে আমি অবগত নই। অন্যরা জানতে পারে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আমি শেরপুরে রয়েছি একটি মিল পরিদর্শনে। তবে কেউ অপরাধ করলে তাকে শাস্তি পেতে হবেই।

মিলন/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়