ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

লালমনিরহাটে বেগুনের কেজি ১০ টাকা, লাউয়ে আগ্রহ নেই ক্রেতাদের

লালমনিরহাট সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:২৭, ২৪ মার্চ ২০২৪   আপডেট: ২২:১৮, ২৪ মার্চ ২০২৪
লালমনিরহাটে বেগুনের কেজি ১০ টাকা, লাউয়ে আগ্রহ নেই ক্রেতাদের

লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ ও আদিতমারী সবজির জন্য খ্যাত। এখানকার হাট বাজারগুলোতে এখন প্রতি মণ বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকায়। অথাৎ প্রতিকেজি বেগুনের দাম পড়ছে ১০ টাকা থেকে সাড়ে ১২ টাকা। এছাড়া, লাউ সাইজ অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে, প্রতি পিস ৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত। কিন্তু, এই খাদ্যপণ্যটি কেনায় বাজারে আসা ক্রেতাদের মধ্যে তেমন আগ্রহ দেখা যায়নি। 

রোববার (২৪ মার্চ) লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার শিয়ালখোওয়া, চাপারহাট, কাকিনা ও আদিতমারী উপজেলার কুমড়ীরহাট, হাজিগঞ্জ সবজি এলাকা খ্যাত পাইকারি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

জানা গেছে, প্রতি বছর রমজান মাসে বেগুনসহ অন্যান্য সবজির দাম বেড়ে যায়। বিগত বছরে বেগুনের বাজার বেশি থাকায় এবারের রোজাতেও বেগুনের দাম নিয়ে আলোচনা ছিল একটু বেশি। ভালো মুনাফা পেতে রমজানকে ঘিরে বেগুন চাষাবাদ করেন অনেক চাষি। প্রথম রমজানে বেগুন ৫০ টাকা কেজি পাইকারি বিক্রি হলেও হঠাৎ ৬/৭ রমজান থেকে দরপতন ঘটে পাইকারি বাজারে এই খাদ্যপণ্যটির। বর্তমানে বাজারে ১০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বেগুন। ফলে খেত থেকে বেগুন সংগ্রহে ব্যয় করা অর্থও উঠাতে পারছেন না চাষিরা। 

এদিকে, লাউয়ের ফলন কম হলেও বাজারে চাহিদা না থাকায় কৃষক ও বিক্রেতারা লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন। সবজি চাষিরা জানান, এ বছর লাউয়ের উৎপাদন খুব বেশি হয়নি। বাজারেও চাহিদা নেই। চাহিদা কম থাকায় দাম কম। 

চাষিরা আরও জানান, বাজারে নিয়ে আসলে ক্রেতা নেই বেগুনের। অথচ প্রথম রমজানেও প্রতি কেজি বেগুন ৪০/৫০ টাকা কেজিতে পাইকারি বিক্রি হয়েছে। জেলার চাপারহাট, শিয়ালখোওয়া, কুমরীরহাটে সবজি বিক্রিতে মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। আগে বহিরাগত ব্যবসায়ীরা খেত থেকে চাষিদের সবজি কিনে নিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় বড় সবজি বাজারে বিক্রি করতেন। তখন ভালোই মুনাফা পেতেন চাষিরা। বর্তমানে বাজারে বহিরাগত ব্যবসায়ীরা না আসায় মন্দা বিরাজ করছে। 

শিয়ালখোওয়া পাইকারি বাজারে বেগুন বিক্রি করতে আসা কৃষক মনিরুল ইসলাম বলেন, বাজারে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকলেও কোনো ক্রেতার দেখা মেলেনি। বিকেলে বাজার শেষের দিকে একজন ক্রেতা ১০ টাকা কেজি দরে দাম বলেছেন। তিন মণ বেগুন বিক্রি করেছি। এই বেগুন খেত থেকে তুলতে শ্রমিক খরচই হয়েছে আমার ৫০০ টাকা।

লোকসান হলেও গাছ ভালো রাখতে বেগুন তুলতে হয় বলে জানান কৃষক আজিজার রহমান। তিনি বলেন, ২৫ শতাংশ জমিতে লাখ টাকা খরচ করে বেগুন চাষ করেছি। এখন পর্যন্ত আড়াই লাখ টাকার বেগুন বিক্রি করেছি। বর্তমানে চাহিদা নেই, তাই দাম কম। কাঁচা বাজার এমনই। সকালের সঙ্গে বিকেলের মিল থাকে না।

কৃষক রব্বানী খন্দকার বলেন, গত সপ্তাহেও ভালো দাম ছিল। ৩/৪ দিন থেকে বেগুনের ক্রেতাই নেই পাইকারি বাজারে। স্থানীয় খুচরা বাজারেও খুবই অল্প দামে বিক্রি হচ্ছে বেগুন। খেত থেকে বেগুন তুলে নিয়ে যেতে বললেও কেউ নেবে না। কারণ তোলার খরচই উঠবে না বেগুন বিক্রি করে। আগে দাম ভালো পাওয়ায় বর্তমানে বাজার মন্দা হলেও বেগুন চাষিদের লোকসান হয়নি।

সবজির পাইকারি ক্রেতা কাওসার বলেন, এ বছর চাষিদের উৎপাদিত বেগুনের রঙ ভালো না। তাই বাইরের আড়তে বেগুনের কদর কমছে। ফলে দামও কমেছে। চাহিদা না থাকায় এখন খুব কম বেগুন পাঠাচ্ছি বাইরের আড়তে।

জামাল/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়