ঢাকা     রোববার   ০৫ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২২ ১৪৩১

ব্যবহারিকে নম্বর দিতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে 

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:৪০, ২৭ মার্চ ২০২৪  
ব্যবহারিকে নম্বর দিতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে 

জাকির হোসেন

ব্যবহারিক পরীক্ষায় নম্বর (মার্ক) দেওয়ার কথা বলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার সরকারি আকবর আলী কলেজের শিক্ষক জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে। শ্রেণিকক্ষ ব্যবহার করে ক্লাস টাইমে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ানোরও অভিযোগ রয়েছে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

রোববার (২৪ মার্চ) সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক, উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

অভিযোপত্র সূত্রে জানা গেছে, ২৪ তম বিসিএস (শিক্ষা) ক্যাডার জাকির হোসেন ২০০৫ সালের জুলাই মাসে উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। গত ১৯ বছর ধরে একই কর্মস্থলে থাকায় জাকির হোসেন কলেজ ঘিরে তৈরি করেছেন নিজস্ব বলয়, বাগিয়ে নিয়েছেন কলেজ শিক্ষক সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদদের পদটিও। সেই ক্ষমতার অপব্যবহার করেই কলেজে ক্লাস চলাকালীন সময়ে তিনি প্রাইভেট পড়ান এবং নানাভাবে শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কাছে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করেন। ব্যবহারিক পরীক্ষায় ফেল করানোর ভয়ে বাধ্যমূলক তার কাছে প্রাইভেট পড়েন শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন ধরে এটি হয়ে আসছে মর্মে শিক্ষার্থীরা ইতোপূর্বে লিখিত অভিযোগ কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ বরাবর দিয়েছিলেন। কিন্তু, এর কোনো সমাধান মেলেনি।

উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজের গণিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মাসুদ রানা পাপ্পু, মারুফ সিদ্দিক, সাজ্জাদ হোসেন খান, মো. রাব্বি, অনন্ত রানাসহ একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষক জাকির হোসেন অর্নাস ১ম বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের কলেজ চলাকালীন সময়ে ক্লাসে বসে প্রাইভেট পড়ান। তিনি এর জন্য টাকাও নিচ্ছেন। এছাড়াও তিনি অর্নাস ২য় বর্ষের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক পরীক্ষার মার্ক দেওয়ার কথা বলে প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০০-৮০০ টাকা করে নিয়েছেন। যা নিয়ম বহির্ভূত ও অবৈধ।

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, আমাদের জানা মতে, সরকারি পরিপত্রে ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্য ১৫০ টাকার বেশি নেওয়ার নিয়ম নেই। অথচ তিনি (জাকির হোসেন) প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষার নামে ৫০০ থেকে ৮০০ করে টাকা নিচ্ছেন। তার দাবিকৃত টাকা না দিলে, তিনি আমাদের ফেল করানোর ভয় দেখান। বিষয়গুলো আমরা উল্লেখ করে জেলা প্রশাসন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও অধ্যক্ষ বরাবর অভিযোগ দাখিল করেছি। অভিযোগগুলো যাচাই বাছাই করে অভিযুক্ত শিক্ষক জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুরে উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজের অধ্যক্ষ (চলতি দায়িত্ব) প্রফেসর মঞ্জুর মোর্শেদ ভুইয়া বলেন, শিক্ষার্থীরা একটি লিখিত অভিযোগ জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর দাখিল করেছেন। তারা (শিক্ষার্থী) গত সোমবার আমার কাছেও একটি অভিযোগ নিয়ে এসেছিল। কিন্তু, আমি অভিযোগটি গ্রহণ না করে শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামসহ সিনিয়র শিক্ষকদের দায়িত্ব দিয়েছিলাম বিষয়টি সমাধান করার জন্য। সে মোতাবেক তারা অভিযোগকারীগণসহ অভিযুক্ত শিক্ষককে নিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করছেন।

অভিযোগের বিষয়ে উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি। একারণে তার বক্তব্য নেওয়া হয়নি।

উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সানজিদা সুলতানা বলেন, অভিযোগটি হাতে পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অদিত্য/মাসুদ

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়