ঢাকা     শুক্রবার   ০৩ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২০ ১৪৩১

গোপালগঞ্জে বৃদ্ধাকে মৃত দেখিয়ে বয়স্ক ভাতা বন্ধ 

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:১১, ৩ এপ্রিল ২০২৪   আপডেট: ২১:২৮, ৩ এপ্রিল ২০২৪
গোপালগঞ্জে বৃদ্ধাকে মৃত দেখিয়ে বয়স্ক ভাতা বন্ধ 

ভুক্তভোগী আয়না বেগম

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায় প্রত্যয়ণপত্র দিয়ে জীবিত বৃদ্ধাকে মৃত দেখিয়ে বয়স্ক ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ভাতা বন্ধ হওয়ায় দুরবস্থায় পড়েছেন ভুক্তভোগী নারী। 

এ ঘটনায় সোমবার (২৫ মার্চ) ভুক্তভোগী আয়না বেগম বাদী হয়ে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী আমলী আদালতে মামলা করেছেন। আদালত মামলা আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। আয়না বেগম কাশিয়ানী উপজেলার পারুলিয়া ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের আব্দুল রউফ মোল্যার স্ত্রী।

দুই মাস বয়স্ক ভাতার টাকা না আসায় আয়না বেগম উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখেন তিনি ‘মৃত্যুবরণ’ করেছেন এমন প্রত্যয়ণপত্রের কারণে তার ভাতা বন্ধ রয়েছে। ২০২৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আয়না বেগম মারা গেছেন উল্লেখ করে পারুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম প্রত্যয়ণপত্র দেন। সেই প্রত্যয়ণপত্রে শনাক্তকারী হিসেবে স্বাক্ষর করেন ওই ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য আসমা বেগম। পরে বিষয়টি নিয়ে আয়না বেগম চেয়ারম্যান ও নারী সদস্যের কাছে গেলে তারা কোনো সমাধান দেননি। 

ভূক্তভোগী আয়না বেগম বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি সুবিচার পাওয়ার আশায় বাদী হয়ে ওই ইউপি চেয়ারম্যান ও নারী সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছি।’ 

অভিযুক্ত নারী সদস্য আসমা বেগম বলেন, ‘আদালতে আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমি আদালতে বুঝব।’ এরপর ফোন সংযোগ কেটে দেন তিনি।  

এ ব্যাপারে অপর অভিযুক্ত পারুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শাওন বলেন, ‘যখন লাইফ ভেরিভিকেশন হয়েছে, তখন ওই বৃদ্ধাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এরপর এলাকায় মাইকিং করা হলেও তিনি আসেননি। আয়না বেগমমহ ৮ জনের বিষয়ে প্রত্যয়ণপত্র দেয়ার জন্য সমাজসেবা অফিস চাপ দেয়। সেই চাপের কারণে আমরা মৃত দেখিয়ে প্রত্যয়ণপত্র দেই। তবে তার ভাতা আবারও চালু করার বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আশা করি, বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে।’

কাশিয়ানী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শেখ বজলুল রশিদ বলেন, চেয়ারম্যান ও নারী সদস্যের স্বাক্ষরিত প্রত্যয়ণপত্রের ভিত্তিতেই ভাতা বাতিল করা হয়েছে। এখানে তাদের দায়বদ্ধতা নেই।

গোপালগঞ্জ সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক হারূন-অর-রশিদ বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আপনাদের (সাংবাদিক) কাছ থেকে জানতে পারলাম। এখানে চাপ দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। চেয়ারম্যান ও নারী সদস্যের স্বাক্ষরযুক্ত প্রত্যয়ণপত্রের কারণে ভাতা বন্ধ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হবে, সেই সঙ্গে ওই নারীর ভাতা যাতে আবারও চালু হয় সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে আবেদন করলে তাৎক্ষণিকভাবে অনুদান দেয়া হবে। যাতে তার কষ্ট না হয়।’ 
 

বাদল/বকুল 

সম্পর্কিত বিষয়:

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়