ঢাকা     মঙ্গলবার   ২২ অক্টোবর ২০২৪ ||  কার্তিক ৬ ১৪৩১

আজ বিশ্ব রক্তদাতা দিবস

তাদের রক্তে শুধুই ভালোবাসা

পাবনা প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:২৮, ১৪ জুন ২০২৪   আপডেট: ০৯:৩৭, ১৪ জুন ২০২৪
তাদের রক্তে শুধুই ভালোবাসা

পাবনা জেলায় তিন সর্বোচ্চ রক্তদাতা বাম থেকে- আসাদুজ্জামান খোকন, ছিফাত রহমান সনম ও খায়রুজ্জামান আহমেদ

ছিফাত রহমান সনম, পেশায় কবি ও সংবাদকর্মী। পাশাপাশি জড়িয়ে আছেন নানা সামাজিক ও মানবিক কর্মকাণ্ডে। অসহায় মানুষের প্রতি তার মমত্ববোধ কাজ করে সবসময়। আর সেই টান থেকে গুরুতর অসুস্থ মানুষকে বাঁচাতে হাত বাড়িয়েছেন অসংখ্যবার। এ পর্যন্ত তিনি ৬৬ জন মানুষকে রক্ত দিয়েছেন। জেলায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রক্তদাতা তিনি।

শুধু সনমই নন, আসাদুজ্জামান খোকন, খায়রুজ্জামান আহমেদ অরুণদের মতো আরও অনেকেই নিজের রক্ত দিয়ে  মানুষকে বাঁচাতে এগিয়ে এসেছেন। শুধুমাত্র মানবিকতা, দায়িত্ববোধ থেকে এসব মানুষ বিনা স্বার্থে রক্ত দিয়ে চলেছেন বছরের পর বছর। কারণ তাদের রক্তে রয়েছে মানুষের প্রতি শুধুই ভালোবাসা। 

আজ ১৪ জুন। বিশ্ব রক্তদাতা দিবস। রক্ত দিয়ে জীবন বাঁচানো সেইসব মানুষকে ক'জনই বা মনে রাখে। শুধু দিবসে নয়, রক্তদানের সুফল নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার দাবি উঠেছে। সেই লক্ষ্যে ৩ যুগ ধরে কাজ করে চলেছে পাবনার সন্ধানী ডোনার ক্লাব। ১৯৮৮ সালে পাবনায় যাত্রা শুরু করে সন্ধানী ডোনার ক্লাব। এবছর তার ৩৬ বছর পূর্ণ হলো। এই ক্লাবের সদস্যদের রক্তে প্রাণ ফিরে পেয়েছেন অসংখ্য অসহায় মানুষ। 

পাবনায় সর্বোচ্চ রক্তদাতা তিনজন হলেন- আসাদুজ্জামান খোকন (৭০ বার), ছিফাত রহমান সনম (৬৬ বার) ও খায়রুজ্জামান আহমেদ অরুণ (৫৩ বার)। 

পাবনার সন্ধানী ডোনার ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সাব্বির হোসেন রিপন বলেন, আমরা মূলত আর্ত মানবতার সেবায় কাজ করছি বিনাস্বার্থে। পাবনা জেলায় প্রথম রক্তদাতা হলেন আওলাদ হোসেন। তিনি ১৯৮৮ সালে ১৭ জুলাই প্রথম রক্ত দেন। তার কিছুদিন পর জেলায় প্রথম নারী রক্তদাতা হলেন আনোয়ারা বেগম। 

সাব্বির হোসেন রিপন আরও জানান, সন্ধানী ডোনার ক্লাবে রক্তদাতা সদস্য আছেন ৪৫০ জন। এখন পর্যন্ত জেলায় ৮০ হাজার মানুষকে রক্ত ও বিনামূল্যে ওষুধ সেবা দেয়া হয়েছে। 

এ বিষয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রক্তদাতা ছিফাত রহমান সনম বলেন, নৈতিক মূল্যবোধ ও মানবিকতা থেকে রক্ত দিয়ে আসছি। অসহায় মানুষের পাশে থাকতে পেরে আত্মতৃপ্তি অনুভব করি। বিশেষ করে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুদের রক্ত দিতে ভাল লাগে। যতদিন বেঁচে আছি এভাবেই মানুষকে ভালবাসতে চাই। 

বর্তমানে জেলায় সর্বোচ্চ রক্তদাতা আসাদুজ্জামান খোকন বলেন, রক্ত দিলে শরীর সুস্থ ও ভাল থাকে। মনে শান্তি পাওয়া যায়। রক্তের জন্য অসহায় মানুষের অস্থিরতা দেখে স্থির থাকতে পারি না। আমি চাই এই রক্তদানের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে  সৌহার্দ্য বেড়ে উঠুক।

সন্ধানী ডোনার ক্লাব পাবনার সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইফতেখার মাহমুদ বলেন, পাবনার মানুষের মধ্যে রক্তদানের উৎসাহ রয়েছে। আর তাই যুগ যুগ ধরে আমরা মানুষের জন্য কাজ করতে পারছি। আমরা স্কুল কলেজে ক্যাম্প করে রক্তদানে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করি। রক্তদানের মাধ্যমে একজন মানুষ নিজের ক্ষতি না করে অন্য মানুষের উপকার করতে পারে। আর সন্ধানী ডোনার ক্লাব রক্তদানের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডও করছে।

শাহীন/ইমন


সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়