ব্যস্ততা বেড়েছে গোপালগঞ্জের কামারপাড়ায়
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন গোপালগঞ্জের কর্মকাররা। প্রতিদিন তৈরি করছেন পশু জবাই ও মাংস প্রস্তুতে ব্যবহৃত ছুরি, চাকু, চাপাতি। সারা বছর কাজ না থাকলেও ঈদের কয়েক দিন ক্রেতাদের পদচারণায় কর্মব্যস্ত থাকেন তারা। আর সেই সাথে আয়ও হয় ভালো। সারা বছর কাজ না থাকায় কোনো ভাবে সংসার চালিয়ে নেওয়া এসব কর্মকারেরা এবারের ঈদে বাড়তি কাজ করে অধিক আয় করতে পারবেন এমনটিই প্রত্যাশা তাদের।
জেলা শহরের পাঁচুড়িয়া এলাকার কামার পল্লিতে গিয়ে দেখা গেছে, ঈদকে কেন্দ্র করে জেলার সর্বত্র দেওয়া হবে পশু কোরবানি। এসব পশু জবাই ও মাংস কাটতে দরকার ছোরা, চাপাতিসহ বিভিন্ন অস্ত্রের। আর এসব অস্ত্র তৈরি করতে গিয়ে হাতুড়ির টুং টাং শব্দে সরগরম হয়ে উঠেছে গোপালগঞ্জের কামারপাড়া।
সারা বছর কাজ কম থাকলেও এ সময়টা অস্ত্র তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটান তারা। তৈরি করা ছুরি, চাপাতিসহ বিভিন্ন অস্ত্র মান অনুযায়ী ৩শ থেকে ৫শ টাকা কেজি দরে বিক্রয় হচ্ছে। এছাড়াও পিস হিসাবেও বিক্রি করা হয়। এ সময় কেউ কেউ আবার পুরনো অস্ত্র ধার দেওয়ার জন্য আনতেও দেখা যায়। গত বছরের মত এ বছরও অল্প মজুরি দিয়ে এসব অস্ত্র তৈরি করে নিচ্ছেন ক্রেতারা।
এ সময় ক্রেতা মো. বজলুর মোল্যা বলেন, সামনে ঈদ। এ বছরও আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায়ে পশু জবাই দিবো। এ জন্য চাপাতি ও ছোড়াসহ বিভিন্ন অস্ত্রের প্রয়োজন। তাই কর্মকার পাড়ায় এসে অস্ত্রের অর্ডার দিয়েছি। দামও গত বছরের মত। আশা করছি সময় মত ডেলিভারি পেয়ে যাব।
অপর ক্রেতা নূর ইসলাম বলেন, এ বছর কোরবানি দিতে পশু কিনেছি। নিজ বাড়িতেই পশু জবাই দিবো। এ জন্য অস্ত্র বানাতে এসেছি। কম দামে অস্ত্র বানাতে পারছি বলে মনে হচ্ছে।
কামার পল্লীর কানাই কর্মকার বলেন, ঈদের দিনে যতই ঘনিয়ে আসছে ক্রেতার চাপও দিন দিন বাড়ছে। কাজের চাপ থাকায় এক প্রকার খাওয়া-ঘুম ছেড়ে দিতে হয়েছে। সময় মত ক্রেতাদের হাতে তাদের অর্ডারকৃত অস্ত্র তুলে দিতে হবে।
খোকন কর্মকার বলেন, বিভিন্ন মাদ্রাসা থেকে অন্ত্রের অর্ডার দিয়েছে। সবকিছুই তৈরি শেষের দিকে। এখন শান দিয়ে অস্ত্রগুলো ধারালো করা হবে। পরে তা সময়মত ডেলিভারি দেওয়া হবে।
বালই কর্মকার বলেন, শুধু নতুন নয় অনেকেই পুরাতন অস্ত্র শান দিয়ে ধারালো করতে আসছেন। দ্রুত সময়ে অল্প মজুরি নিয়ে তা ঠিক করে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও নতুন যে সব অস্ত্র বানিয়েছিলাম তাও বিক্রি হচ্ছে।
বাদল/ইমন