ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে চাঁদাবাজির অভিযোগ
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
ছবি: সংগৃহীত
আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা আনন্দ উল্লাস শুরু করেন। দেশ গড়ার নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করে সাধারণ মানুষ। তবে জিনাইদহের কালীগঞ্জে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চলছে নীরব চাঁদাবাজি শুরু হওয়ায় স্থানীয়দের সেই স্বপ্নে ভাটা পড়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, জোরপূর্বক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়া হচ্ছে। টাকা না দিলে দোকান বন্ধ কতরে দেওয়াসহ আগুন লাগিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগের পর উপজেলার বিভিন্ন বাজারে নীরব চাঁদাবাজি শুরু হয়েছে। বিশেষ করে সংখ্যালঘু ও সাধারণ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের দোকান বন্ধ রাখতে ও আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। শহরের একটি গ্রুপ এই চাঁদাবাজির সাথে জড়িত রয়েছে বলে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে। ভয়ে তারা মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। তাদের নাম বললে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শহরে ৫/৬ টি গ্রুপ চাঁদাবাজি শুরু করেছে। রাত হলেই তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে টাকা নিয়ে আসছে। দোকান বন্ধ থাকলে ফোন করা হচ্ছে তাদের। তাদের চাহিদা মতো টাকা দিতে হচ্ছে। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে মারধর ও আগুন দিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। টানা আন্দোলনের মধ্যে তাদের বেচাকেনাও ভালো না। পরিবার নিয়ে বেশ কষ্টের মধ্যে দিন পার করতে হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী বলেন, তার কাছ থেকে গতকাল দুই হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। টাকা নেওয়ার পর তাদের নাম বললে দোকান পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠান চালানো নিয়ে খুব ঝামেলায় আছি।
এক ব্যবসায়ী জানান, বুধবার সন্ধ্যার দিকে তার কাছে ৪৫ হাজার টাকা দাবি করা হয়। তিনি ৪০ হাজার টাকা দিয়েছেন। তারপরও ভয়ে দোকান খুলতে পারছেন না। কারা টাকা নিয়েছে জানতে চাইলে তিনি নাম বলতে অস্বীকৃতি জানান।
এদিকে বুধবার শহরে এক সহিংসতা বিরোধী সমাবেশে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়ার খবরের পর দেশে যে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির নেতারা।
এ সময় বিএনপির নেতারা বলেন, যারা চাঁদাবাজি করছে তারা দলের কেউ হতে পারে না। এই সুযোগে দলের মধ্যে অনুপ্রবেশকারী দুর্বৃত্তরা লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করে অরাজকতা পরিবেশ সৃষ্টি করে এই বিজয়কে ধুলিসাৎ করতে চাই। দলের কেউ এমন ঘৃণিত কাজে জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে দল থেকে বহিষ্কারের কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ সুপার আজিম-উল-আহসান বলেন, ঙদেশের এই ক্রান্তিকালে যারা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করছে তারা দেশের শত্রু। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শাহরিয়ার/সনি