আশুলিয়ায় আরও চার হত্যা মামলা, সাবেক এমপিসহ আসামি ৬৩
সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
সাভারের আশুলিয়া থানায় পৃথক আরও চারটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) ভোরে হওয়া এসব মামলায় মোট ৬৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে সহস্রাধিক।
এরমধ্যে শুক্রবার ভোরে মাওলানা মো. সাদিকুর রহমান (২৮) নিহতের ঘটনায় স্ত্রী মোছা. শাহিদা আক্তার (২৩) বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় আটজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন।
নিহত মাওলানা মো. সাদিকুর রহমান (২৮) ময়মনসিংহের ধুবাউরা থানার কালিকাবাড়ি এলাকার মো. আ. লতিফের ছেলে। পরিবারসহ আশুলিয়ার ডেন্ডাবর এলাকায় কামাল উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। আশুলিয়ার পলাশবাড়ী স্কাইলাইন গার্মেন্টস কারখানায় দুই বছর ধরে তিনি পেশ ইমাম ছিলেন।
মামলায় সাভার উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন খান (৫০), আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন ভুঁইয়া (৪৫), আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কবীর সরকার (৪৫), এনামুল হক মুন্সি (৪৭), মুঞ্জ দেওয়ান (৫৮), মো. মোয়াজ্জেম হোসেন (৫৫), নুরুল আমিন সরকার (৪৫), মইনুল ইসলাম ভুঁইয়াসহ (৪২) অজ্ঞাত আরও ৩০০-৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা সবাই আশুলিয়া থানার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী।
এছাড়া আরাফাত মুন্সি (১৫) নামে এক শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় তার বাবা স্বপন মুন্সি (৩৬) বাদী হয়ে শুক্রবার ভোরে আশুলিয়া থানায় দশজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন।
নিহত আরাফাত মুন্সি (১৫) গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের ছোট বনগ্রাম এলাকার স্বপন মুন্সির ছেলে। পরিবারের সঙ্গে আশুলিয়ার বাইপাইলের নামাবাজারের আব্বাস নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে ভাড়া বাসায় থাকত সে। আশুলিয়ার পলাশবাড়ী বার্ডস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলো।
মামলায় পাথালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ান (৬০), মো. মোয়াজ্জেম হোসেন (৫৫), সোহাগ মেম্বার (৪০), সফি মেম্বার (৪৫), জুয়েল (২৮), মো. সোহাগ দেওয়ান (৩০), রাতুল (২৮), সুমন পন্ডিত (৩৯), রহিম বাদশা (৪৫), রনি মেম্বারসহ (৪৫) অজ্ঞাত আরও ২০০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা সবাই আশুলিয়া থানার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী।
অন্যদিকে তানজিল মাহমুদ সুজয় (১৯) নামে এক শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় শুক্রবার ভোরে তার মামা মো. মাজেদুল হক (৩৬) বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।
নিহত তানজিল মাহমুদ সুজয় (১৯) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের বিটঘর এলাকার শফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি পরিবারের সঙ্গে আশুলিয়ার বাইপাইলের নামাবাজারের মালেক টাওয়ারের ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিনি গাজীপুরের টঙ্গীর ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।
মামলায় ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম (৫২), এনামুল হক মুন্সি (৪৭), মুঞ্জ দেওয়ান (৫৮), মো. মোয়াজ্জেম হোসেন (৫৫), মইনুল ইসলাম ভুঁইয়া (৪২), সফি মেম্বার (৪৫), পান্নু শেখ (৩৫), গাউছ মোল্লা (৩৬), সুলতান (৪২), রিয়াজ (৪০), মাহবুব (৩৮), ফরহাদসহ (৪০) অজ্ঞাত আরও ৩০০-৩৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা সবাই আশুলিয়া থানার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী।
এছাড়াও বিএনপিকর্মী মো. মামুন খন্দকার (৪৩) মৃত্যুর ঘটনায় শুক্রবার ভোরে নিহতের স্ত্রী মোসাম্মৎ সাথী (৩৬) বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় ৩৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।
নিহত মো. মামুন খন্দকার (৪৩) আশুলিয়ার মধ্য গাজীরচট এলাকার মৃত হাজী মজিবর রহমানের ছেলে। তিনি বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন।
মামলায় ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. সাইফুল ইসলাম (৫২), সুমন ভুঁইয়া (৫০), মো. কবির সরকার (৫২), এনামুল হক মুন্সি (৪৭), মইনুল ইসলাম ভুঁইয়া (৪২), মনিকা হাসান (৩০), মো. ফারুক হোসেন ওরফে ওমর ফারুক (৪৭), মতিউর রহমান (৬২), মো. ছবেদ আলী (৪৫), লতিফ মণ্ডল (৬৫), হাসান মণ্ডল (৩৮), গাউস মোল্লা (৩৫), পান্নু শেখ (৩৫), আনোয়ার হোসেন (৩৫), রুবের ভুঁইয়া (জামাই) (৩৫), মো. শাকিল হাওলাদার (৪৫), ইকবাল করিব আলম (৫৫), হাজী মিজানুর রহমান (৬০), আ. কাদের দেওয়ান (৬০), রোমেল (৪০), এ. আর মন্টু পাটোয়ারী (৫৫), মিরণ মিয়া (৪৫), আমির হোসেন জয় (৩২), মো. আবুল খায়ের (৫০), মো. মনির হোসেন (৪০), শামীম মণ্ডল (৪০), সাইফুল ইসলাম রানা (৩৮), সফি মাদবর (৪৫), আলমগীর মণ্ডল (৩৮), তাওহীদুল ইসলাম (২৭), জিন্নত ব্যাপারী (৪৯), মোজাম্মেল হোসেন (৫০), হুমায়ুন কবীর (৪৫)। আসামিরা সবাই আশুলিয়া থানার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী।
আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মাসুদুর রহমান বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এসব হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
আরিফুল/ইমন