সুপ্রদীপ চাকমা
ভারত ও চীনের অর্থনীতির বাতাসে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে
রাঙামাটি প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

শুক্রবার বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক ও বৌদ্ধ সংস্কৃতি বিকাশে করণীয় শীর্ষক কর্মশালায় বক্তব্য দেন উপদেষ্টা ড. সুপ্রদীপ চাকমা
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, “ভারত ও চীন মিলিয়ে আমাদের চার পাশে প্রায় তিনশ কোটি মানুষের বসবাস। যেখানে ভারত ও চীন অর্থনীতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, আমরাও সেই বাতাসেই এগিয়ে যেতে চাই। তাই প্রধান উপদেষ্টা সব সময় বলেন, আমাদের পিছিয়ে থাকার কোনো অবকাশ নেই।”
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকালে রাঙামাটি পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক ও বৌদ্ধ সংস্কৃতি বিকাশে করণীয় শীর্ষক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন। বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, “এগিয়ে যাওয়ায় ক্ষেত্রে আমাদের কিছু দায়িত্ব নিতে হবে। সেগুলো হচ্ছে- দেশকে অসম্প্রদায়িক বানাতে হবে, সবাইকে সম অধিকার দিতে হবে। আপনাদের চিন্তা করার কোনো অবকাশ নেই যে, বৃহৎ জনগোষ্ঠী আপনাদের পেছনে ফেলে রাখবে।”
তিনি আরো বলেন, “প্রতিটি ধর্মেই অর্থনৈতিক দিক নির্দেশনা রয়েছে। বৌদ্ধ ধর্মও তার ব্যতিক্রম নয়। আজকের সেমিনারে বিষয়বস্তুতেও আর্থ-সামাজিক বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত আছে।”
পার্বত্য চট্টগ্রাম ইস্যুতে উপদেষ্টা বলেন, “পার্বত্য এলাকায় কৃষির সম্ভাবনা রয়েছে।তার কতটুকু আমাদের এলাকার মানুষ গ্রহণ করতে পেরেছে এবং কতটুকু পারলো না সেটা আমাদের ভাবতে হবে। সরকারতো বরাদ্দ কম দেয় না। এবারো প্রায় ৫০০ কোটি টাকা শুধুমাত্র পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, অন্যান্য মন্ত্রণালয় থেকেও বরাদ্দ আসে। তবুও, কেন এলাকার উন্নয়ন হয় না সেটা ভেবে দেখতে হবে।”
পাহাড়ের পর্যটন নিয়ে তিনি বলেন, “অপার সম্ভাবনা থাকার পরও পর্যটনের বিকাশ ঘটেনি। এর দায় কার? ষাটের দশকে কাপ্তাই বাঁধের ফলে আমরা সবকিছু হারিয়ে ফেলেছি, এই ধারণা নিয়ে থাকলে চলবে না।”
উপদেষ্টা বলেন, “কাপ্তাই হ্রদ এখন সোনায় রূপান্তর হয়েছে। শুধু পরিকল্পনা করে কাজে লাগাতে হবে। সে কাজগুলো কেউ করছে না। পর্যটন ও মৎস্য খাত তো জেলা পরিষদের হাতে ন্যস্ত। তারা কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করে না। শুধু এই হ্রদকে পরিকল্পনামাফিক ব্যবহার করা গেলে তিন পার্বত্য জেলার অর্থনৈতিক চেহারায় বদলে যাবে।”
সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, আমি চাই, এই এলাকার উন্নয়ন পরিকল্পনা এখানকার মানুষই করুক। তাহলে সেটা টেকসই হবে। সমতলে বিশেষজ্ঞ এনে পরিকল্পনা করা হলে তা স্থায়িত্ব পাবে না। অতীতে এমন প্রচুর নজির রয়েছে।”
কর্মশালায় আরো বক্তব্য রাখেন- বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান ভবেশ চাকমা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর সুকোমল বড়ুয়া, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সাবেক উপমন্ত্রী মনি স্বপন দেওয়ান, মং সার্কেল চিফ সাচিং প্রু চৌধুরী, অশোক কুমার চাকমা।
ঢাকা/শংকর/মাসুদ