হলে সিট না দেওয়ায় নোয়াখালী সরকারি কলেজের হল সুপার লাঞ্ছিত
নোয়াখালী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
সুপারিশকৃত শিক্ষার্থীকে হলে সিট না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে নোয়াখালী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম সোহাগের বিরুদ্ধে হল সুপারের কক্ষ ভাঙচুর ও সুপারকে লাঞ্ছনার অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (৫ মে) নোয়াখালী সরকারি কলেজের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অফিস কক্ষে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন হল সুপার মো. আনোয়ার হোসেন। এ সময় তিনি লাঞ্ছনার শিকার হন। মো. আনোয়ার হোসেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং শহীদ অধ্যাপক আবুল হাসেম হলের সুপারের দায়িত্ব পালন করছেন।
জানা যায়, নিয়ম লঙ্ঘন করে ছাত্রদলের সুপারিশকৃত ছাত্রকে হলে সিট না দেওয়ায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
হেনস্তার শিকার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘কয়েকদিন হলো আমি কলেজের হলের দায়িত্ব পেয়েছি। ছাত্রদলের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম সোহাগ এসে একটা ছাত্রকে হলে ওঠানোর বিষয়ে আমাকে বলে। তখন আমি বলি নিয়ম মতে আবেদন অনুযায়ী সিট খালি থাকা সাপেক্ষে সবাইকে হলে ওঠানো হবে। তখন সে আমাকে হুমকি-ধামকি দেয়। আমি তাকে সংযত আচরণ করতে বললে সে আরো উত্তেজিত হয়ে আমার কক্ষের টেবিল ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।’’
‘‘এটা তার এলাকা, আমাকে সে দেখে নেবে,’’ বলেও রাশেদুল ইসলাম হুমকি দিয়েছে বলে জানান আনোয়ার হোসেন।
রাশেদুল ইসলাম সোহাগ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। শুধু একটু চেঁচামেচি করেছিলাম। তাছাড়া ওই স্যার জামায়াত-শিবিরপন্থী।’’
এদিকে শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার নোয়াখালী সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে।
নূর হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী এ সময় বলেন, ‘‘পরিবর্তনের বাংলাদেশে আর যেন কোনো শিক্ষক লাঞ্ছনার শিকার না হন। আমরা শিক্ষককে লাঞ্ছনার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একইসঙ্গে অভিযুক্তকে আইনের আওতায় আনারও জোর দাবি জানাচ্ছি।’’
নাহিদা সুলতানা নামে অপর এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘‘ছাত্রলীগের অত্যাচারের কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে রাজপথে নেমেছিল। কিন্তু আরেকটি ছাত্র সংগঠন এখন সেই একই আচরণ করছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা আবার যদি একত্রিত হয়, তাহলে নোয়াখালী কলেজ ক্যাম্পাস থেকে তারাও বিতাড়িত হবে।’’
এদিকে মঙ্গলবার শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদে কলেজের অধ্যক্ষের কক্ষে শিক্ষকেরা জরুরি সভায় মিলিত হন। আলোচনা করে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে সভা শেষে জানানো হয়।
এ প্রসঙ্গে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর জাকির হোসেনকে ফোনে কল করা হলে ‘ব্যস্ত আছি’ বলে তিনি সংযোগ কেটে দেন।
মাওলা সুজন//