ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৪ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

মুন্সীগঞ্জে লঞ্চে দুই নারীকে প্রকাশ্যে মারধর, যুবক গ্রেপ্তার

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি  || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫৭, ১০ মে ২০২৫   আপডেট: ১৬:১৮, ১০ মে ২০২৫
মুন্সীগঞ্জে লঞ্চে দুই নারীকে প্রকাশ্যে মারধর, যুবক গ্রেপ্তার

মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে যাত্রীবাহী লঞ্চে দুই নারীকে প্রকাশ্যে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শনিবার (১০ মে) দুপুরের দিকে মুন্সীগঞ্জ সদর থানা পুলিশ অভিযান চিলিয়ে নেহাল আহমেদ জিহাদকে (২৫) সদর উপজেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।  

নেহাল সদর উপজেলার দক্ষিণ ইসলামপুর গ্রামের মনির হোসেনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে মুন্সীগঞ্জ সদর থানা সূত্রে জানা গেছে। মামলার পরে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে। 

উল্লেখ্য, গত ৯ মে রাত ৮টার দিকে মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে যাত্রাবিরতি করা একটি যাত্রীবাহী লঞ্চে দুই নারীকে প্রকাশ্যে মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি ব্যাপক সমালোচিত হয়।  

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, সাদা রঙের পোষাক পরিহিত আনুমানিক ১৫-১৭ বছর বয়সী এক নারীকে লঞ্চের একেবারে সামনের অংশে বেল্ট দিয়ে বেপরোয়াভাবে পেটাচ্ছেন নেহাল আহমেদ জিহাদ। এ সময় বিভিন্ন বয়সী পুরুষ সেই দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করছিলেন। 

এ প্রসঙ্গে পরে নেহাল আহমেদ জিহাদ গণমাধ্যমে বলেন, ‘‘স্থানীয় দুই-তিনশ লোক তাদের (ওই নারীদ্বয়ের) আচরণ ও বেশভূষায় ক্ষিপ্ত হয়ে পতিতা বলে আখ্যায়িত করে আক্রমণ করতে চলে আসে। আমি তাদের নিবৃত্ত করতে ভাই হিসাবে শাসন করেছি। এটা আমার করা উচিত হয়নি। আবার আমি এটা না করলে মানুষজন নারীদের জামাকাপড় টেনে খুলে ফেলতো। আরও বেশি হেনস্তা করতো। তাছাড়া স্থানীয়দের কাছ থেকে অন্তত ৮টি মোবাইল আমি তাদের উদ্ধার করে দিয়েছি। আমি মারধরের ঘটনায় অনুতপ্ত।’’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাওয়া এ ঘটনার একাধিক ভিডিওতে আরও দেখা যায়, থেমে থাকা লঞ্চের দ্বিতীয় তলায় উঠে গণহারে অপ্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ যাত্রীদের পেটাচ্ছেন ১০-১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল। এসময় তারা লঞ্চের কেবিনগুলোতে তল্লাশি চালাচ্ছেন এবং দরজা ভাঙার চেষ্টা করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নৌভ্রমণে বের হয়ে আক্রমণের শিকার ‘এমভি ক্যাপ্টেন’ নামের লঞ্চটিতে পিকনিকের উদ্দেশ্যে আসা অন্তত ৬ জন যাত্রী মারধরে আহত হন। এর মধ্যে দুইজন অপ্রাপ্তবয়স্ক নারী। 

এছাড়া লঞ্চটিতে অন্তত তিনশ সাধারণ যাত্রী ছিলেন। তাদের সাথে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও স্থানীয়দের উত্তেজনা দেখে তারাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল আলম জানান, সন্ধ্যার নাস্তা কেনার জন্য ৮ থেকে ১০ জন নারী যাত্রী লঞ্চ থেকে পল্টুনে নামে। সেখানে থাকা স্থানীয়রা মাদকসেবী ও পতিতা সন্দেহ করে তাদের পিছু নিয়ে লঞ্চে ওঠার চেষ্টা করলে লঞ্চের ম্যানেজার মো. শফিক তাদের প্রবেশে বাধা দেন। এতে উত্তেজিত লোকজন জড়ো হয়ে লঞ্চে ঢুকে ভাঙচুর, লুট ও যাত্রীদের মারপিট করেন। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে উত্তেজনা কমে আসে।

রতন//

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়