পরশুরাম সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে ভারতের খাল খনন, বিজিবির প্রতিবাদ
ফেনী প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
জমে থাকা বৃষ্টির পানি সরানোর জন্য ফেনীর পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের বল্লামুখা বেড়িবাঁধ এলাকার নোম্যান্সল্যান্ডে খাল খনন করেছে বিএসএফ। শনিবার (৩১ মে) দুপুরে ভারী বৃষ্টির মধ্যে তারা কাজ করে। এ ঘটনায় বিকেলে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
পতাকা বৈঠকে বিজিবির পক্ষে কালিকাপুর ক্যাম্পের সুবেদার হানিফ এবং বিএসএফের পক্ষে আইসিনগর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার উপস্থিত ছিলেন।
বিজিবি ফেনী ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোশারফ হোসেন বলেন, “নোম্যান্সল্যান্ডে ভারত খাল খনন করেছে বিষয়টি পুরোপুরি সত্য নয়। মূলত বাংলাদেশ অংশে বল্লামুখা বাঁধ নির্মাণের কারণে ভারতের ত্রিপুরা এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য তারা তাদের অংশে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করে। যার কিছু অংশ নোম্যান্সল্যান্ডের ২০-৩০ মিটারের মধ্যে চলে আসায় আমরা বাঁধা দিয়েছি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।”
এলাকাবাসী জানান, খাল খননের প্রথম চেষ্টা হয় গত বৃহস্পতিবার রাতে মির্জানগর ইউনিয়নের পূর্ব রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের সীমান্ত পিলার ২১৫৭/১১-এস সংলগ্ন এলাকায়। স্থানীয়দের সহযোগিতায় বিজিবির বাধায় সেদিন পিছু হটে বিএসএফ।
স্থানীয় বাসিন্দা মমতাজ মিয়া বলেন, “বৃষ্টির রাতে স্কেভেটর নিয়ে এসে তারা (বিএসএফ) খাল কাটার চেষ্টা করে। বিজিবির সঙ্গে আমরাও গিয়ে তাদের বাধা দেই। পরে তারা চলে যায়।”
পূর্ব রাঙ্গামাটিয়ার বাসিন্দা মো. মজনু বলেন, “সীমান্ত পিলারের কাছে বাঁধ না দিলে ভারতীয় পানি আমাদের গ্রামগুলোতে ঢুকবে।”
বিজিবি সূত্র জানায়, পতাকা বৈঠকে বিএসএফ জানিয়েছে, অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য তারা ড্রেন তৈরি করেছে, যা বাংলাদেশে বন্যা বা বাঁধে ক্ষতির কারণ হবে না। তারা দাবি করেছে, বাংলাদেশ বল্লামুখায় নোম্যান্সল্যান্ডে বাঁধ নির্মাণ করেছে, যার ফলে ভারতীয় এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোশারফ হোসেন বলেন, “নোম্যান্সল্যান্ডে স্থাপনা নির্মাণ উভয় দেশের নীতিমালায় নিষিদ্ধ। তাই আমরা পতাকা বৈঠকে এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছি।”
পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান বলেন, “ভারতের সুবিধার্থে সীমান্তে টিলা কেটে পানি বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। বিজিবি ও স্থানীয়দের প্রচেষ্টায় তা ঠেকানো গেছে। আমরা সতর্ক আছি, এমন কাজ করতে দেওয়া হবে না।”
ঢাকা/সাহাব/মাসুদ