‘চোখের জলে ভেসে গেল আমাদের ঈদ আনন্দ’
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম
দুর্ঘটনায় দুমড়েমুচড়ে যাওয়া মাইক্রোবাস
“অনেক দিন পর ভাই ও ভাতিজাদের সঙ্গে দেখা হতো। ইচ্ছে ছিল, একসঙ্গে ঈদের নামাজ পড়ে বাড়িতে ফিরে গরু কোরবানির। সবাই মিলে অনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে নেওয়া হয়েছিল সব প্রস্তুাতি। মুহূর্তেই সেই আনন্দ বিষাদে পরিণত হলো। আমাদের ঈদ আনন্দ চোখের জলে ভেসে গেল।”
এভাবে কথাগুলো বলছিলেন ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ঠিকাদার আমজাদ মন্ডলের ছোট ভাই মো. আজিজুর রহমান।
আরো পড়ুন: ট্রাকের পেছনে মাইক্রোবাসের ধাক্কা, টাঙ্গাইলে নিহত ৩
মঙ্গলবার (৩ জুন) সকালে মহাসড়কের করাতি পাড়া এলাকায় ট্রাকের পেছনে মাইক্রোবাসের ধাক্কায় আমজাদসহ তার দুই ছেলে মারা যান। এ ঘটনায় আহত হন নিহত আমজাদের স্ত্রী, ছেলের বউসহ তিনজন আহত হন।
আজিজুর রহমান বলেন, “চালকের অবসাবধানতার কারণে আমাদের পরিবার ধ্বংস হলো। আমরা তদন্ত করে জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি।”
নিহত আমজাদের পরিবার জানায়, শেরপুর সদরের কামারচর গ্রামের মৃত মোনছের মন্ডলের ছেলে আমজাদ মন্ডল। ঈদের ছুটিতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তিনি ঢাকা থেকে শেরপুর যাচ্ছিলেন।
তাদের বহনকৃত মাইক্রোবাসটি ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের করাতিপাড়া এলাকায় আসলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেয়। ফলে মাইক্রোবাসের সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলে আমজাদ মন্ডল (৬৫) এবং তার দুই ছেলে অতুল মন্ডল (১৪) ও রাহাত মন্ডল (২৬) মারা যান।
এ ঘটনায় আমজাদ মন্ডলের স্ত্রী মাকসুদা মন্ডল, রাহাত মন্ডলের স্ত্রী মরিয়ম বেগম ও মাইক্রোবাসের চালক বরিশালের হযরত আলীর ছেলে নাজমুল হোসেন আহত হন। তাদের ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার বিকেলে তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
বাসাইল থানার ওসি জালাল উদ্দিন বলেন, “লাশ উদ্ধারের পর গোড়াই হাইওয়ে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।”
গোড়াই হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আনিসুর রহমান বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চালকের অসাবধনার কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। বিকেলে স্বজনদের কাছে তিনটি মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। মাইক্রোবাস ও ট্রাকটি জব্দ করে থানায় আনা হয়েছে।”
ঢাকা/কাওছার/মাসুদ