ডাকসু নির্বাচন: আলোচনার কেন্দ্রে স্বতন্ত্র এজিএস পদপ্রার্থী তাহমীদ
ঢাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে সামনে রেখে প্যানেল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদসহ বেশ কয়েকটা ছাত্র সংগঠন।
তবে প্যানেলের বাইরে থেকেই আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন এজিএস (সহ–সাধারণ সম্পাদক) পদপ্রার্থী তাহমীদ আল মুদ্দাসসীর চৌধুরী। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তিনি।
শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ বলছে, প্যানেলের ভিড়ে না থেকে স্বতন্ত্র হওয়াতেই এখন তিনি আরো বেশি গ্রহণযোগ্য, আরো বেশি শক্তিশালী।
গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক তাহমীদ। সংগঠনটির ভেতর থেকে দীর্ঘদিনের সক্রিয়তা এবং আন্দোলন-সংগ্রামে অংশগ্রহণ থাকলেও শেষ মুহূর্তে তাকে রাখা হয়নি দলের প্যানেলে। এজিএস পদে তার পরিবর্তে মনোনয়ন পান অন্য একজন। এ সিদ্ধান্তেই হতাশা ছড়িয়ে পড়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে শিক্ষার্থীরা লেখেন, যে ছিল সামনে, তাকেই সরিয়ে রাখা হলো কেন?
মুনতাহা ইসমাইল ইশা নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, “কি আজব! বুঝলাম নাহ। কয়েকদিন আগেই বাগছাসের ভাই-আপুরা কত উৎসব-আমেজের সাথে তাহমীদ ভাইয়ের বিয়েতে গেলো! আর এখন উনাদের প্যানেলেই তাহমীদ ভাই মাইনাস!”
আরেকজন লিখেছেন, “আপনি প্যানেলে না থেকে আরো বেশি শক্তিশালী হয়েছেন। আমরা এখন জানি, আপনি কারো কোটায় নয়, নিজ অবস্থানেই প্রার্থী।”
তাহমীদ নিজেও বিষয়টি দেখছেন ইতিবাচকভাবে। তিনি বলেন, “যোগ্যতার বিভিন্ন মানদণ্ড থাকে। যিনি মনোনয়ন পেয়েছেন, তিনি অযোগ্য- তা নয়। তারও ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা আছে। তবে আমার কাছে যাকে যোগ্য মনে হয়, অন্য কারো চোখে তা ভিন্ন হতে পারে। এটা আপেক্ষিক বিষয়।”
“আমার একটা গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, এটা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। শুধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী নয়, যারা হলে থাকে না বা কো–কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিতে যুক্ত, তাদের মধ্যেও আমার সমর্থন রয়েছে,” -যোগ করেন তাহমীদ।
তিনি আরো বলেন, “দল থেকে মনোনয়ন পেলে হয়তো একটি নির্দিষ্ট ভোট ব্যাংক পাওয়া যেত। কিন্তু সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমি মনে করি, বর্তমান সময়ে ডাকসু নির্বাচনে শিক্ষার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতিই বেশি আস্থা রাখছে। দল থেকেও বলা হয়েছিল, ইচ্ছা করলে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করা যাবে। তাই আমি সেটাই করেছি। এখন ইশতেহার নিয়ে কাজ করছি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঘুরে দেখা গেছে, এজিএস পদে তাহমীদের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে দিন দিন। হলে হলে পোস্টার-লিফলেট না থাকলেও, মুখে মুখেই ছড়িয়ে পড়ছে তার প্রচারণা। যারা ছাত্র রাজনীতি করে না, বরং সাংস্কৃতিক, বিতর্ক বা স্বেচ্ছাসেবী কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাদের মধ্যেও তাহমীদের প্রতি সমর্থন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
ডাকসু নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে ২১ আগস্ট প্রকাশ করা হয়েছে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা। ২৫ আগস্ট মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন এবং ২৬ আগস্ট ঘোষণা করা হবে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা। ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী