ঢাকা     শনিবার   ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  পৌষ ৬ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

জাকসু নির্বাচন: উপাচার্যের বিরুদ্ধেই আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ

জাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:১৪, ২৭ আগস্ট ২০২৫   আপডেট: ১৭:৩৩, ২৭ আগস্ট ২০২৫
জাকসু নির্বাচন: উপাচার্যের বিরুদ্ধেই আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন (জাকসু) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের অনুষ্ঠান ও সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এ নির্বাচনী আচরণবিধি অমান্য করে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে প্রাক্তন ও বর্তমান নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের বিরুদ্ধে।

আরো পড়ুন:

এমনকি নির্বাচনের এ আচরণবিধির তোয়াক্কা না করে সেই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান ও জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মাফরুহি সাত্তারের বিরুদ্ধে।

প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা নিজেরাই আইন অমান্য করলে অন্যদের অবস্থা অবস্থা কী হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন মহল। পাশাপাশি জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য হয়ে নির্বাচনকালীন সময়ে ছাত্রদলের দলীয় প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করায় কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

জানা যায়, ১৯৮৯ সালে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের সংঘর্ষে নিহত ছাত্রদল নেতা কবিরের মৃত্যুবার্ষিকীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে মিলাদ-মাহফিলের আয়োজন করে ছাত্রদল। তবে দলীয় ব্যানারে এ রকম একটি জনসমাগম প্রজ্ঞাপন অনুসারে স্পষ্টত বেআইনি।

গত ১৯ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এ বি এম আজিজুর রহমান (মুকুল) স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন-২০২৫ উপলক্ষে ক্যাম্পাসে নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০ আগস্ট থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সব ধরনের অনুষ্ঠান সভা-সমাবেশ, কর্মসূচি এবং মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

দোয়া মাহফিলে উপস্থিতির বিষয়ে উপাচার্য বলেন, “মসজিদ তো এবাদতের জায়গা, এখানে দোয়া মাহফিলে হয়েছে, তাই আমি যোগ দিয়েছি। দোয়া মাহফিলে হাজির হলে দোষের কিছু নেই, রাজনীতিও করার কিছু নেই।”

ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠান, সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ সময়ে ছাত্রদলকে বিশেষ অনুমতি দেওয়া হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, “তারা প্রতি বছরই দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে থাকে। তবে আমরা প্রথমে বলেছি না করলে ভালো হয়। তারা জানিয়েছে, শুধু দোয়া করবে। তাই ঊর্ধ্বতনদের মৌখিক অনুমতি নিয়ে তারা দোয়া মাহফিল করেছে। তবে না করলে ভালো হত।”

এদিকে, সভায় উপস্থিত নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, “পৃথিবীর কোথাও কারো মৃত্যুর জন্য আয়োজিত সভাকে কোন ধরনের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে আনা হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়েও বর্তমানে সব বিভাগীয় সভা, অনুষদ সভা, শিক্ষা সংক্রান্ত সভা, গবেষণা সংক্রান্ত সভা এবং প্রশাসনিক সভাগুলো যথা নিয়মে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।”

তিনি লেখেন, “যথা নিয়মে মসজিদগুলোতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সাথে আদায় করা হচ্ছে এবং শুক্রবারে খুতবা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আলোচ্য বিজ্ঞপ্তি এসব সভা সমাবেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। আমাদের কেন্দ্রীয় মসজিদও বিশ্ববিদ্যালয় ও সাভার ডেইরি ফার্মের যৌথ প্রতিষ্ঠান, যা কোনো একক কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন নয়। তাই এখানে দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণকে নির্বাচনবিধি লঙ্ঘন বলাটা সমীচিন নয়।”

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়