ঢাকা     সোমবার   ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ৩০ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

শহরে নতুন প্রাণের স্পন্দন (ভিডিও)

আরিফ আহমেদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪০, ২০ আগস্ট ২০২০   আপডেট: ১৮:০২, ১৮ জুন ২০২৪
শহরে নতুন প্রাণের স্পন্দন (ভিডিও)

ছবি এবং ভিডিও : আমিনুল ইসলাম

শহর! মায়াবী শহর। কারো কারো কাছে জাদুর শহর, কিংবা স্বপ্ন পূরণের শহর। মানুষ সবসময় ভালো থাকার আশা করে। একটু উন্নত জীবন গড়ার জন্য সবাই শহরকেই বেছে নেয়। এই শহরেই যেন জীবনের সব প্রাপ্তির বসবাস। তাইতো মানুষ ভিড় বাড়িয়ে চলে এই শহরে। 

সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শহর উন্নত হয়ে চলে। মানুষের চাহিদা পূরণ করার প্রয়াসে উঁচু উঁচু দালান গড়ে উঠছে অবিরাম। সেই উন্নয়নের তাগিদে সবাই ভুলেই গেছে এ শহর শুধু মানুষের নয়। এই শহরেও এক সময় গাছ-গাছালিতে ভরপুর ছিল। খাল-বিল ছিল, সেখানে পশু-পাখির রাজত্ব ছিল। হরেকরকম পাখি বসবাস করতো এই শহরের বুকে। শীতের আগমনে অতিথি পাখিরাও এসে জড়ো হতো। পাখিদের কিচিরমিচিরে মুখরিত থাকতো সকাল-সন্ধ্যা। 

মানুষের ক্রমবর্ধমান চাহিদার জন্য গাছ-গাছালি উজার করে বিশাল বিশাল অট্টালিকা আর রাজপথ তৈরি করা হয়েছে। মানুষ নিজেদের বাসস্থানের জন্য ধ্বংস করছে পশু-পাখিদের আবাসস্থল। সেজন্য প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে চেনা-জানা কত পাখি। এই কংক্রিটের শহরে যে পাখিদের নীড় গড়ার জায়গার বড্ড অভাব এখন।

তবুও মানুষের সঙ্গে লড়াই করে প্রকৃতিতে টিকে থাকার চেষ্টা করে যায় পাখিরাও। মানুষের মতোই ওরা টিকে থাকার প্রত্যয়ে বেছে নেয় বিকল্প ব্যবস্থা। গাছের ডালের নীড় গড়তে না পেরে শহরের দালানেই ঘর বাঁধছে। কখনো ছাদের এককোণে, কখনোবা বারান্দার দেয়ালের ফাঁকে, নয়তো জানালার উপরের দেয়ালে। 

এমনই এক প্রাণের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে দেশের জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডি ডটকমের সিনিয়র সাব-এডিটর (স্পোর্টস) আমিনুল ইসলামের বাসায়। তার বাসার জানালার সঙ্গে রুমের ভেতরের দিকে রাখা ঝুলন্ত ফুলের টবে বাসা বেঁধে রয়েছে এক জোড়া বুলবুলি। ইতোমধ্যে তারা তিনটে ফুটফুটে ছানাও দিয়েছে।  

আমিনুল বলেন, ‘করোনায় লকডাউনের জন্য এতদিন বাসায় থাকা হয়েছে। আমাদের চোখের সামনেই পাখিগুলো বাসা বানিয়ে বাচ্চাও ফুটিয়েছে। আমার ছোট মেয়ে বাচ্চাগুলো দেখে খুবই আনন্দ পায়। মনে হয় শহরের প্রত্যেকটি বাসা-বাড়িতে যদি পাখির জন্য বাসস্থানের জায়গা থাকতো, তাহলে পাখিরা হারাতো না এ শহর থেকে।'  

কবি রজনী কান্ত সেনের কাল জয়ী ‘স্বাধীনতার সুখ’ ছড়াটি এখন শুধু বইয়ের পাতায় রয়েছে। সেখানে তুলে এনেছিলেন চড়ুই আর বাবুই পাখির কথপোকথন। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে আজ শুধু চড়ুই নয় অন্য পাখিরাও অট্টালিকাতেই বাসা বাঁধছে। খাঁচায় বন্দি পাখিদের পাশাপাশি কিছু মুক্ত পাখিও অট্টালিকার জানালায় খড়কুটো দিয়ে বাসা বানিয়ে নতুন প্রাণের জন্ম দিচ্ছে।

তারাও শহরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে। শহরের বুক থেকে হারিয়ে যাওয়ার আগে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখবার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। এখনো হয়তো সময় আছে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের বাহক পাখিদের হারিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করার।

মানুষের পাশাপাশি পাখিদের কথা ভাবার এখনই সময়। নয়তো সেদিন খুব দূরে নয়, যখন এই পৃথিবীর বুকে শুধু মানুষ আর কংক্রিট রয়ে যাবে। সৌন্দর্য আর প্রকৃতি রক্ষার অন্যতম বাহক পাখিরা হারিয়ে যাবে। তখন হয়তো শুধু বইয়ের পাতায় আর অন্তর্জালে তাদের ছবি আর নামটুকুই অবশিষ্ট থাকবে।

 

ঢাকা/মাহি 

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়