রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ভুক্তভোগীর মায়ের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ক ডাক্তারের মামলা, বিচার দাবি
রাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া কিশোরীর যৌন হয়রানির অভিযোগে বিচার চেয়ে মামলা করেছিলেন এক মা। মামলা চলমান অবস্থায় অভিযুক্ত যৌন নিপীড়ক ভুক্তভোগীর মায়ের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেছেন। 'প্রতিরোধে স্লোগানে কাঁপাও যৌন নিপীড়কের ভিত'- স্লোগানে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং যৌন নিপীড়কের দ্রুত বিচার দাবি করেছেন ভুক্তভোগী কিশোরীর মা।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কেন্দ্রীয় ক্যাফেটোরিয়ায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
জানা গেছে, অভিযুক্ত ডা. রাজু বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের উপ-প্রধান চিকিৎসক। এছাড়া তিনি রাজশাহী মহানগর যুবলীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভুক্তভোগীর মা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সাবিনা ইয়াসমিন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, যৌন অপকর্মের দায়ে অভিযুক্ত রাবি মেডিকেল সেন্টারের ডা. রাজুর বিরুদ্ধে উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে।
বহিস্কারের পর থেকে আমার সঙ্গে যারা কাজ করছে তাদের হুমকি দেয়। মামলার ভয় দেখিয়ে মীমাংসা করতে চাপ দিচ্ছেন রাজু। গত ১৩ নভেম্বর রাজু আমিসহ আরও দুইজনকে আসামী করে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মামলা দেন। তার মামলায় আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। মূলত আসল ঘটনাকে অন্য খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ডা. রাজু আমেনা ক্লিনিকে ঘটে যাওয়া ঘটনাকে অস্বীকার করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। রাজুর সঙ্গে বেশকিছু সাবেক এবং বর্তমান শিক্ষক ও কর্মকর্তা জড়িত রয়েছেন। রাজুর দ্বারা কৃত যৌন হয়রানির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং আমার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাই।
ভুক্তভোগীর মা বলেন, রাজু চিকিৎসার নিয়মাবলি পরোয়া না করে দীর্ঘদিন ধরে অনেককে নিপিড়ন করে যাচ্ছে। তাই অনতিবিলম্বে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার ও তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদী, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক বোরাক আলী, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাহবুবা কানিজ কেয়া, মহিলা পরিষদ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোবাররা সিদ্দিকাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় অর্ধশত শিক্ষক-শিক্ষার্থী।
উল্লেখ্য, গত ৩০ অক্টোবর রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে নগরীর তালাইমারি এলাকার আমেনা ক্লিনিকে যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটে। পরে ৩১ অক্টোবর সকালে ভুক্তভোগী শিশুর মা বাদী হয়ে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন ডা. রাজু আহমেদের বিরুদ্ধে।
এছাড়া উপচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে গত ৫ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ডা. রাজুকে সাময়িক বহিস্কার করে। এদিকে গত ১৩ নভেম্বর ডা. রাজু আহমেদ (১৪৯/৪৪৮/৩২৩/৩২৪/) ধারায় ভুক্তভোগীর মাসহ দুইজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
/শাকিবুল/মেহেদী/