ঢাকা     রোববার   ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ||  অগ্রহায়ণ ২৯ ১৪৩২

Risingbd Online Bangla News Portal

জাবি আইন অনুষদের ২ শিক্ষককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

জাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:০৮, ১২ আগস্ট ২০২৪  
জাবি আইন অনুষদের ২ শিক্ষককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আইন অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক তাপস কুমার দাস ও সুপ্রভাত পালকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন একই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে তাদের চাকরি থেকে অব্যহতি না দেওয়া পর্যন্ত ক্লাস বর্জন ও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।

রোববার (১১ আগস্ট) বেধে দেওয়া ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বেচ্ছায় চাকরি থেকে অব্যহতি না নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যাম্পাসে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেন। 

সোমবার (১২ আগস্ট) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মহুয়া চত্বরে জড়ো হয়ে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে  অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এরপর বিক্ষোভ মিছিল শেষে শহিদ মিনারের সামনে সমাবেশের আয়োজন করেন তারা।

সমাবেশে অংশ নিয়ে ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আরশাদুল হক শিক্ষক নিয়োগে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ করে বলেন, আমরা শুনেছি তাপস কুমার দাস দুর্নীতির মাধ্যমে তার পছন্দের লোকদের নিয়োগ দিয়ে তার নিজস্ব বলয় তৈরি করেছেন। তার বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছের ছোটভাই সুপ্রভাত পালকে নিয়োগ দিয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায়  রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচিত দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া সুপ্রভাত পালের তৎকালীন গার্লফ্রেন্ড বনশ্রী রানীকেও একই বিভাগে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তী নিয়োগেও যোগ্য প্রার্থীকে বাদ দিয়ে তাদের পছন্দের লোকদের নিয়োগ দেন। 

৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তানজিম চৌধুরী বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলাম এবং গত ২২ জুলাই আমি গুলিবিদ্ধ হয়েছিলাম। তাপস কুমার দাস স্যারের সঙ্গে অনেকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি, ফোন বন্ধ রাখেন। পরদিন ২৩ জুলাই আমার বাবা তার সঙ্গে যোগাযোগ করে কান্না করে অনুনয় করার পরেও তিনি আমাকে কোনো সাহায্য করেনি। উল্টো আমার বিরুদ্ধে সাভার থেকে লোকজন এনে হলে হামলা করার মিথ্যা অভিযোগ আনেন।

৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রিয়াজুল রাহী বলেন, গত ২২ জুলাই পুলিশ গেরুয়াতে আক্রমণ করলে পুলিশের গুলির মুখে আমরা আত্মসমর্পণ করি। সে সময় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আটক হওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য আইনি সুপারিশের সেল গঠন করা হয়। আইন অনুষদের ডিন ও বিভাগের চেয়ারম্যান তাপস কুমার সেই সেলের সদস্য। তাপস স্যারকে জানানো হলে তিনি  বলেন, আমি নাকি জামায়ত, শিবির, হিজবুত তাহরীরের লোক এবং দুষ্কৃতিকারী। যেখানে অন্য বিভাগের শিক্ষকরা আটক হওয়া শিক্ষার্থীদের ছাড়িয়ে নিচ্ছেন, সেখানে আমার বিভাগের স্যার এসব বলেন! 

সহযোগী অধ্যাপক সুপ্রভাত পাল শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত তোলেন এমন অভিযোগ এনে শিক্ষার্থী সুহার্ত্য দৌলা অনিক বলেন, গত ২৭ জুন আমার ফাইনাল পরীক্ষা চলছিল। আমি তাড়াহুড়ো করে ক্লাসে আসি এবং দ্বিতীয় সারির একটি বেঞ্চে বসে পরীক্ষা শুরু করি। তাড়াহুড়োয় আমার ফোনটা রাখতে মনে ছিল না। পরীক্ষার একদম শেষ পর্যায়ে আমার ফোনটা বেজে উঠলে তিনি বলেন, আমি নকল করছি। আমি নকল করিনি বললে তিনি আমাকে সবার সামনে থাপ্পড় মারেন। আমার ফোন নেওয়ার দেড় মাস পার হলেও এখনো তিনি এখনো ফেরত দেননি।

উল্লেখ্য, রোববার (১১ আগস্ট) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জড়িত শিক্ষার্থীদের হেনস্থা, তাদের দুষ্কৃতিকারী হিসেবে আাখ্যা দেওয়া, শিক্ষার্থীর গায়ে হাত তোলা, ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন, টুপি-বোরকা পরিহিত শিক্ষার্থীদের নানাভাবে হেনস্তা, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিরুপ আচরণ, পরিকল্পিতভাবে রেজাল্ট কমিয়ে দেওয়াসহ নানা অভিযোগে ওই দুই শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি করে মানববন্ধন করা হয়।

/আহসান/মেহেদী/

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়